প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শিশু নির্যাতন-কেলেঙ্কারির ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী বুদাপেস্টের রাজপথে বিক্ষোভে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ।
২০১০ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অরবান হাঙ্গেরিতে শিশুদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক হাই-প্রোফাইল শিশু নির্যাতন-কেলেঙ্কারি সরকারকে চাপের মুখে ফেলেছে।
সেপ্টেম্বরে দেশটির রাজধানী বুদাপেস্টে একটি কিশোর বন্দি শিবিরে নতুন অভিযোগ সামনে আসার পর বিরোধী দল টিআইএসজার নেতা পিটার ম্যাগিয়ারের নেতৃত্বে শনিবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। কেন্দ্রের নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে যে, সজোলো স্ট্রিট কিশোর বন্দি শিবিরের পরিচালক একটি ছেলের মাথায় লাথি মারছেন।
এই ঘটনার পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে চার কর্মীকে হেফাজতে নেওয়া হয় এবং সরকার ঘোষণা করেছে যে, তারা এ ধরনের সব শিশু কেন্দ্র সরাসরি পুলিশের তত্ত্বাবধানে রাখবে।
শনিবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বুদাপেস্টের সড়কে ‘শিশুদের রক্ষা করুন!’ লেখা ব্যানার ধরে হেঁটে যান এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বেশ কয়েক বছর আগের একটি মামলায় শারীরিক নির্যাতনের শিকারদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অনেকেই হাতে ছোট ছোট খেলনা এবং মশালও বহন করেন।
শুক্রবার ২০২১ সালের একটি অপ্রকাশিত সরকারি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে ম্যাগয়ার। সেখানে দেখা গেছে, রাষ্ট্র পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৭৩ বছর বয়সী পেনশনভোগী জসুজা সাজালে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শিশুদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে তাতে আমাদের ক্ষুব্ধ হওয়া উচিত।
এদিকে অরবানের সরকার জোর দিয়ে বলেছে, সন্দেহভাজন শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শনিবার বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, অরবান এবং তার সরকার যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা পর্যাপ্ত নয়।
এর আগে গত বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্যাটালিন নোভাকও জনসাধারণের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন এবং রাষ্ট্র পরিচালিত একটি বিদ্যালয়ের উপ-পরিচালককে ক্ষমা করার ঘটনায় পদত্যাগ করেন। সূত্র: আল-জাজিরা

