প্রচণ্ড দাবদাহে ইউরোপে স্বস্তির নেই কোনো লক্ষণ

0

ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলো আগামী সপ্তাহেও প্রচণ্ড দাবদাহে হাঁসফাঁস করতে পারে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ তাপমাত্রা কমার কোনো লক্ষণ সেখানে দেখা যাচ্ছে না।

ইতালি, স্পেন এবং গ্রীস এরমধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে উচ্চ তাপমাত্রার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে।

এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে সিসিলিতে ৪৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড করেছিল। আর দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে দাবদাহের কেন্দ্র হবে সারদিনিয়া।

ইতালিয়ান আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ গিলিও বেট্টি জানান, “তাপমাত্রা ১৯ থেকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। এটা শুধু ইতালিতেই নয়, গ্রীস, তুরস্কসহ বলকান অঞ্চলে। বেশ কিছু জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার আগের রেকর্ড ভেঙ্গে যেতে পারে।” 

ইতালি সরকার শনিবার যেসব এলাকায় রেড এলার্ট থাকবে সেখানকার লোকজনকে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সরাসরি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। একই সাথে বয়স্ক বা ঝুঁকিপূর্ণদের দিকে যথাযথ খেয়াল রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

রোমের একজন ট্যুর গাইড ফেলিসিটি হিন্টন জানান, “তীব্র দাবদাহের সাথে মানুষের ভিড়ের কারণে শহর ভ্রমণ দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।”

অন্যদিকে, গত কয়েকদিনে গ্রীসে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে।

দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আকর্ষণ এথেন্সের দ্যা অ্যাক্রপলিস শুক্র ও শনিবার গরমের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে।

আর স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে শনিবার বনে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ইতোমধ্যে অন্তত দুই হাজার মানুষকে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় চার হাজার একর জমি।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দমকল কর্মীদের সহায়তার জন্য সেনা মোতায়েন করেছে স্পেন কর্তৃপক্ষ।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ইউরোপের এই দাবদাহ আগামী সপ্তাহে বলকান অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হতে পারে। যদিও সার্বিয়া ও হাঙ্গেরিসহ কয়েকটি দেশে তাপমাত্রা এর মধ্যে ৩৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে।

আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ বেট্টি বলছিলেন, “দাবদাহ প্রতিবছরই বাড়ছে এবং এর ব্যাপকতাও বাড়ছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণিত লক্ষণ।”

“ইউরোপের গরমকাল গত কয়েকবছরে বেশি গরম হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো সাধারণ গ্রীষ্মকাল পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাভাবিক গ্রীষ্মকালটাই এখন বিরল হয়ে উঠছে”।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্লাইমেট মনিটরিং সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, এবারের জুন মাসটা ছিল এ যাবতকালে ইউরোপের সবচেয়ে গরম জুন মাস।

লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের জলবায়ু বিজ্ঞানের প্রভাষক পাওলো সেপ্পি এবারের দাবদাহের ধরনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

তিনি বলেন, “দক্ষিণ ইউরোপে এটা দেখা যাচ্ছে। আবার একই সময়ে দাবদাহ দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অঞ্চলে।

সম্প্রতি দাবদাহ দেখা গেছে দক্ষিণ এশিয়ায়, ভারত, চীনসহ কয়েকটি এলাকায়। তবে এটা বিস্ময়কর কিছু নয়”।

সূত্র : বিবিসি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here