স্ত্রীর প্রতি অন্ধ বিশ্বাস- মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হবেন। এমন বিশ্বাস থেকে মৃত্যুর পর ৬ দিন ঘরের মধ্যেই স্ত্রীর লাশ রেখে দিয়েছেন স্বামী। কিন্তু ৬ দিনেও লাশ জীবিত হয়নি। বরং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। খবর পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে খাটের নিচ থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই সাথে নিহতের স্বামী, ৪ মেয়ে সহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের আটক করা হয়। পরে চিকিৎসার জন্য সবাইকে মনোহরদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার রাতে নরসিংদীর মনোহরদী পৌরসভার বাজারের পাশে অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিকের এক শিক্ষকের পরিবারে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত শামীমা সুলতানা নাজমা তার স্বামী ও পরিবারের সদ্যদের বলে গিয়েছিলেন, যদি কোনো সময় তিনি মারা যান, তাহলে তার লাশ ঘরে রেখে যেনো অপেক্ষা করা হয়। তিন থেকে চারদিন পর তিনি পুনরায় জীবিত হবেন। গত সোমবার শামীমা সুলতানা নাজমা মারা গেলে তার পরিবারের সদ্যসরা বিষয়টি কউকেই জানায়নি। তারা সকলেই মায়ের জীবিত হওয়ার আশায় মরদেহ খাটের নিচে রেখে দেয়। এরই মধ্যে মরদেহে পচন ধরে। ধীরে ধীরে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। দুর্গন্ধ তীব্র হলে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাদের ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়া দেয়নি। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে যায় পুলিশ। সেখানে পরিবারের সকলকেই ঘরেই অবস্থান করতে দেখে। ওই সময় খাটের নিচে নাজমার মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ সদর হাসাপাতালে প্রেরণ করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পরিবারের সদস্যদের থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে তাদের মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার খন্দকার আনিসুর রহমান বলেন, থানা থেকে তাদের রাতেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। প্রেশার বেশি থাকায় তাদের চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের শারীরিক ভাবে অন্য কোন সমস্যা পাওয়া যায়নি।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন বলেন, পরিবারটি এক পীরের মুরীদ ছিলেন। তারা জিকিররত অবস্থায় নাজমার মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদেরকে জানিয়েছে। পুনরায় জীবিত হবে এই ধারণায় তারা লাশ খাটের নিচে রেখে দিয়েছিলো। আমরা নিহতের স্বামী, চার মেয়ে, দুই নাতি ও এক নাতনিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এটি স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক মৃত্যু তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে।