পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের পথে দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র

0
পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের পথে দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণের বিষয়ে কাজ এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে একটি বৃহত্তর বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চুক্তির অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই চুক্তির বিস্তারিত তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ নির্মাণ খাতে ১৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং জানিয়েছেন, জাহাজ নির্মাণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং পারমাণবিক শিল্পে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুন অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরি করবে।

হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্ট শিটে বলা হয়েছে, সিওলকে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাহাজ নির্মাণে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের পাশাপাশি অন্যান্য মার্কিন শিল্প খাতে দক্ষিণ কোরিয়া আরও ২০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপের খবর অনুযায়ী, ওয়াশিংটন কোরীয় পণ্যের ওপর বাণিজ্য শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করায় এই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট লি এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আমাদের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় পরিবর্তনশীল বিষয়গুলোর মধ্যে একটি; বাণিজ্য, শুল্ক এবং নিরাপত্তা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, দুই দেশ পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরির কাজ শুরু করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট লি নিশ্চিত করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক শক্তিচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন তৈরির অনুমোদন দিয়েছে।

পাশাপাশি, সিওল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াকরণেও করতে পারবে। চুক্তিটির যৌথ ফ্যাক্ট শিটে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষ মার্কিন বাণিজ্যিক জাহাজের সংখ্যা এবং যুদ্ধ-প্রস্তুত মার্কিন সামরিক জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে জাহাজ নির্মাণ সংক্রান্ত একটি ওয়ার্কিং গ্রুপের মাধ্যমে আরও সহযোগিতা করবে। ইয়োনহাপ আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে চারটি বা তারও বেশি ৫ হাজার টন প্রচলিতভাবে অস্ত্রসজ্জিত, পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরি করতে চাইছে।

বিশ্লেষকদের মতে, পারমাণবিক শক্তিচালিত জাহাজ তৈরি করতে পারলে দক্ষিণ কোরিয়ার নৌ ও প্রতিরক্ষা শিল্পে তা এক বিশাল গতি আনবে এবং সিওলকে এই প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সম্পন্ন অল্প কয়েকটি দেশের তালিকায় যুক্ত করবে।

তবে, ওয়াশিংটন-সিওল পারমাণবিক সাবমেরিন প্রযুক্তি চুক্তির বিষয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। সিওলে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত দাই বিং বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরনের অংশীদারিত্ব নিছক বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের বাইরে গিয়ে সরাসরি বৈশ্বিক অপ্রসারণ নীতি এবং কোরীয় উপদ্বীপ ও বৃহত্তর অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলবে।

উত্তর কোরিয়া এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

সূত্র: আল জাজিরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here