পাবলিক ও শ্রেণি পরীক্ষায় শ্রুতিলেখকের সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা

0
পাবলিক ও শ্রেণি পরীক্ষায় শ্রুতিলেখকের সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা

পাবলিক ও শ্রেণি পরীক্ষায় শ্রুতিলেখকের সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীনের স্বাক্ষরে নতুন এই নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, এ নীতিমালা পাবলিক ও শ্রেণি পরীক্ষায় শ্রুতিলেখক এর সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৫ নামে অভিহিত হবে।

‘শ্রুতিলেখক’ অর্থ এমন একজন ব্যক্তিকে বুঝাবে যিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি অথবা আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে কিংবা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে স্বহস্তে লিখতে সক্ষম নয় এমন পরীক্ষার্থীর প্রদত্ত বক্তব্য শ্রবণ করে উত্তরপত্রে অবিকল বা হুবহু লিখবেন।

‘শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী’ অর্থ এমন একজন পরীক্ষার্থীকে বুঝাবে যিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি অথবা আকস্মিক দুর্ঘটনা কিংবা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে স্বহস্তে লিখতে সক্ষম নয় কিন্তু তিনি বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে উত্তর দিতে পারেন।

‘পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ’ অর্থ এমন কর্তৃপক্ষকে বুঝাবে যারা কোনো সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পাবলিক ও শ্রেণি পরীক্ষা গ্রহণ করবার উদ্দেশ্যে গঠিত সংশ্লিষ্ট কমিটি/কর্তৃপক্ষ।

‘সংগতিপূর্ণ বন্দোবস্ত’ অর্থ প্রয়োজনীয় এবং যথোপযুক্ত পরিমার্জন ও সমন্বয়, যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বা মাত্রাতিরিক্ত বোঝা আরোপ না করে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অন্যদের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার উপভোগ এবং প্রয়োজনীয় স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য উপযোগী পরিবেশ ও ন্যায্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে।

শ্রুতিলেখক নিয়োগ প্রদানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর ধারা ১৬ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ঝ), ও (ড) অনুযায়ী সব পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য সংগতিপূর্ণ বন্দোবস্ত প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।

নীতিমালার কার্যপরিধি: এই নীতিমালা সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসমূহ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড-এর অধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাবলিক/শ্রেণি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের জন্য প্রযোজ্য হবে।

নীতিমালা ব্যতিরেকে অন্য কোনো নির্দেশনা কিংবা এ নীতিমালার খন্ডিত বা পরিবর্তিত নির্দেশনা অনুসারে ইচ্ছামত কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করিতে পারবে না।

শ্রুতিলেখকের যোগ্যতা: যে কোনো পরীক্ষার ক্ষেত্রে শ্রুতিলেখক হবেন সংযুক্ত-১ এ উল্লিখিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি। শ্রুতিলেখক নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্পষ্ট ও প্রমিত উচ্চারণ, বোধগম্য হস্তাক্ষর, শুদ্ধ বানান এবং দ্রুত লেখায় পারদর্শী এমন ব্যক্তিকে যাচাইপূর্বক সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিতে হবে।

শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব: একজন শ্রুতিলেখক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে নিম্নবর্ণিত দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীকে সরবরাহকৃত প্রশ্ন নির্ভুলভাবে পড়ে শুনাবেন।

প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর পক্ষে প্রদেয় উত্তর অবিকল বা হুবহ ও সঠিকভাবে লিখবেন।

উত্তরপত্রে পরীক্ষার্থী কর্তৃক পূরণীয় তথ্য (রোল নম্বর/রেজিস্ট্রেশন নম্বর/প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নাম ইত্যাদি) প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর পক্ষে নির্ভুলভাবে পূরণ করবেন।

শ্রুতিলেখক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীকে চিত্রসম্বলিত প্রশ্ন যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করবেন।

পরীক্ষা কেন্দ্রের সব নিয়ম-কানুন শ্রুতিলেখক মেনে চলবেন।

শ্রুতিলেখক নিয়োগ বা মনোনয়ন পদ্ধতি:

শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী নিজের পক্ষ থেকে শ্রুতিলেখক মনোনয়ন করবার সুযোগপ্রাপ্ত হবেন। তবে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শ্রুতিলেখক মনোনয়ন করতে ব্যর্থ হন, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ/সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্রুতিলেখক সরবরাহ করবেন। শ্রুতিলেখক মনোনয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর মতামত প্রাধান্য পাবে। তবে শর্ত থাকে যে, পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবশ্যই আন্তরিক হয়ে এই নীতিমালার অনুচ্ছেদ ৩ অনুসরণ করে যোগ্য ও দক্ষ শ্রুতিলেখক মনোনয়নের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।

পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী শ্রুতিলেখক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে অনলাইনে/সরাসরি সংযুক্ত-২ এ বর্ণিত আবেদনপত্রের নমুনা অনুসরণ করে আবেদন করবেন।

শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী কর্তৃক আবেদনকৃত শ্রুতিলেখক মনোনয়নের অনুমোদন প্রদানের পূর্বে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ সংযুক্ত-১ অনুযায়ী শ্রুতিলেখকের যোগ্যতা এবং প্রদত্ত তথ্যাদি যাচাই করবেন। সংযুক্ত-১ এ বর্ণিত শ্রুতিলেখক হবার সর্বোচ্চ যোগ্যতা অতিক্রম করলে অথবা শ্রুতিলেখকের প্রদত্ত তথ্যাদি সঠিক নয় এরূপ প্রতীয়মান হলে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত কারণ দর্শিয়ে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর শ্রুতিলেখক সংক্রান্ত আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন। শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী কর্তৃক অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত এমন ইচ্ছাকৃত কর্মকাণ্ডের শাস্তিস্বরূপ পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করতে পারবেন।

শ্রুতিলেখক নিয়োগের আবেদন প্রাপ্তির পর আবেদনকারীর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ শ্রুতিলেখক হিসেবে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (সরকারি-বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ও সংগঠনের পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেমন- সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠন এবং এনজিও সদস্য) মনোনয়ন প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রুতিলেখক মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থীর আবেদনের ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থীর জন্য শ্রুতিলেখক মনোনয়ন করে থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার অন্তত ৭ (সাত) দিন পূর্বে শ্রুতিলেখকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর সাক্ষাতের সুযোগ করে দিবেন।

পরীক্ষার ৭ (সাত) দিন পূর্বে শ্রুতিলেখক সংক্রান্ত সব বাধ্যবাধ্যকতা বা আনুষ্ঠানিকতা বা দাপ্তরিক কাজসমূহ পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ এবং পরীক্ষার্থী উভয়কেই সমাপ্ত করতে হবে যেন পরীক্ষার পূর্বমুহূর্তে পরীক্ষার্থীকে বাড়তি মানসিক চাপ নিতে না হয় এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সর্বাধিক সময় ব্যয় করতে পারেন। 

শ্রুতিলেখক দ্বারা পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা প্রদানের বিষয়টি এবং পরীক্ষার্থীর প্রাপ্য সুবিধাসমূহ সম্পর্কে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রকে ন্যূনতম ৭ দিন পূর্বে লিখিতভাবে অবগত করতে হবে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান, সব পরিদর্শকবৃন্দ এবং নিরাপত্তারক্ষীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উক্ত বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।

শ্রুতিলেখকের সংখ্যা: শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী নিজের মনোনীত সর্বোচ্চ ২ (দুই) জন শ্রুতিলেখকের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাইপূর্বক ২ (দুই) জনকে অনুমোদন করবেন। পরীক্ষার্থী অনুমোদনকৃত যে কোন একজন শ্রুতিলেখক দিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেন। পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শ্রুতিলেখক সরবরাহ করবার ক্ষেত্রেও ২ (দুই) জন শ্রুতিলেখকের ব্যবস্থা করবেন যাতে কোনো কারণে একজন শ্রুতিলেখক অসুস্থ হলে বা অন্য কোনো কারণে উপস্থিত হতে সক্ষম না হলে অপর ব্যক্তি শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

অতিরিক্ত সময় প্রাপ্তি: শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী মোট সময়ের এক-চতুর্থাংশ অতিরিক্ত সময় পাবেন। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টা পরীক্ষার সময়ের বিপরীতে ১৫ (পনের) মিনিট অতিরিক্ত সময় পাবেন। এক ঘণ্টার কম সময়ব্যাপী পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত সময় আনুপাতিক হারে হবে। তবে পরীক্ষার ব্যাপ্তি যতই সংক্ষিপ্ততর হোক না কেন, অতিরিক্ত সময় ন্যূনতম ১০ (দশ) মিনিট এর কম হবে না।

শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থীর অতিরিক্ত সময় প্রাপ্তির বিষয়টি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অবশ্যই সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র-প্রধানকে অবগত করবেন এবং কেন্দ্র-প্রধান কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সব পরিদর্শককে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।

সহায়ক উপকরণ সঙ্গে নেওয়া: সব পরীক্ষায় সাধারণভাবে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ক্যালকুলেটর, জ্যামিতি বক্স বা অনুরূপ সরঞ্জাম ব্যবহারের অনুমতি থাকে, সে সব পরীক্ষায় শ্রুতিলেখক পরীক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী উক্ত সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী তার উপযোগী সরঞ্জাম যেমন টকিং ক্যালকুলেটর, ব্রেইল স্লেট, টেইলর ফ্রেম, জিওমেট্রি ম্যাট, হইলচেয়ার, ব্রেইল স্কেল, অ্যাবাকাস, এনালগ ম্যাগনিফায়ার, পরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইলেকট্রনিক ম্যাগনিফায়ার ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন।

স্বল্পদৃষ্টির পরীক্ষার্থী কোন সহায়ক ডিভাইস যেমন ইলেকট্রনিক ম্যাগনিফায়ার ইত্যাদি ব্যবহার করতে চাইলে তা অবশ্যই পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে অবগত করতে হবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী উক্ত সহায়ক ডিভাইস সব পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারযোগ্য তার বৈধ কাগজ/নথি/সনদ/প্রত্যয়নপত্র প্রদর্শন করবে। পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ তা যাচাইপূর্বক অনুমতি প্রদান করবে এবং বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রকে অবগত করবে।

শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী বিশেষ ক্ষেত্রে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে কম্পিউটার ব্যবহার করে পরীক্ষা প্রদান করতে পারবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী তার উপযোগী কিবোর্ড ও হেডফোন ব্যবহার করতে পারবেন এবং পরীক্ষা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত কম্পিউটার, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করবেন। এ সব কম্পিউটারে কোনরূপ ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে পারবে না। এরূপ ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীকে অন্তত একদিন পূর্বে কম্পিউটারটি ব্যবহারের উপযোগী করে প্রস্তুত করার সুযোগ প্রদান করা যাবে।

প্রতিষ্ঠান প্রধান/কেন্দ্র সচিব/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব: কেন্দ্রে কোনো শ্রুতিনির্ভর/অসুস্থ/শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে, তার জন্য নীচতলায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন।

পরীক্ষার্থীর জন্য সংগতিপূর্ণ আসনের বন্দোবস্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর প্রতিবন্ধিতার বা দুর্ঘটনার ধরণ অনুযায়ী উপযুক্ত টেবিল চেয়ার অথবা বেড’র ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষার্থী/পরীক্ষার্থীর অভিভাবক উক্ত সরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে পরীক্ষা কেন্দ্রকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

স্বল্পদৃষ্টি সম্পন্ন পরীক্ষার্থীর কক্ষে পর্যাপ্ত বা ক্ষেত্র বিশেষে অতিরিক্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।

প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী শ্রুতিলেখকের পাশাপাশি পিতা-মাতা/আত্মীয় স্বজন/উপযুক্ত ব্যক্তিকে কেন্দ্রে অবস্থানের অনুমতি প্রদান করা যেতে পারে। উক্ত পরীক্ষার্থীর দৃষ্টিসীমার মধ্যে অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবস্থানের ব্যবস্থা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবেন।

শ্রুতিলেখক চেয়ে তফসিল-২ এ বর্ণিত আবেদনের সাথে পরীক্ষার্থীর বাড়তি যা যা প্রয়োজন তা পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করতে হবে। পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ তা যাচাই-বাছাইপূর্বক আন্তরিকতার সঙ্গে অনুমোদন করবেন এবং পরীক্ষা কেন্দ্রকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করবেন। প্রয়োজনে পরীক্ষার্থী/পরীক্ষার্থীর অভিভাবক উক্ত সরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে পরীক্ষা কেন্দ্রকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ী অতিরিক্ত সময় প্রদান করবেন;

পরীক্ষার্থীর প্রমাণক:  প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর ধারা ৩১ অনুযায়ী সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র (সুবর্ণ নাগরিক কার্ড) প্রতিবন্ধিতার পরিচায়ক হিসাবে বিবেচিত হবে।

স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী, আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে কিংবা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে স্বহস্তে লিখতে সক্ষম নয় এরূপ পরীক্ষার্থী শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে চাইলে সেক্ষেত্রে সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার নিকট হতে এমর্মে প্রত্যয়ন আনবেন যে, পরীক্ষার্থী দুর্ঘটনাজনিত কিংবা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে স্বহস্তে লিখতে সক্ষম নয় এবং নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ এটা পর্যালোচনা করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। তবে উল্লেখ্য থাকে যে, তফসিল-২ এ বর্ণিত আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রদত্ত সংযুক্তি সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার কাজে হতে প্রাপ্ত প্রত্যয়নপত্রের মেয়াদ সর্বাধিক ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে হতে হবে।

শ্রুতিলেখকের সম্মানী বা পারিতোষিক: পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগকৃত শ্রুতিলেখকদেরকে সম্মানী বা পারিতোষিক পরিশোধ করতে হবে। সম্মানী বা পারিতোষিকের পরিমাণ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে এবং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতকৃত বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখতে হবে।

পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার কার্যক্রম শেষে উৎসাহ প্রদানের জন্য শ্রুতিলেখকদের সনদপত্র/প্রত্যয়নপত্র প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন যাতে শ্রুতিলেখক হিসেবে কাজ করতে আরো বেশি স্বেচ্ছাসেবক আগ্রহী হয়।

অভিযোগ প্রতিকার এবং প্রতারণা প্রতিরোধের বিধান: শ্রুতিলেখক মনোনয়নের ক্ষেত্রে কোন অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে যে কোনো পক্ষ সংশ্লিষ্ট দপ্তর/অধিদপ্তর/মন্ত্রণালয়ের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন। উল্লিখিত দপ্তর অভিযোগ আমলে নিয়ে ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে এ নীতিমালা অনুসরণ করে অভিযোগ নিষ্পত্তি করবেন।

শ্রুতিনির্ভর পরীক্ষার্থী যেন কোন ক্রমেই বিশেষ সহায়ক ডিভাইস অথবা শ্রুতিলেখকের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূত, অনৈতিক, অবৈধ পন্থায় সুবিধা গ্রহণ করতে না পারে সে লক্ষ্যে কঠোরভাবে সতর্ক থাকার জন্য পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিদর্শককে উপযুক্ত নির্দেশনা প্রদান করবেন।

শ্রুতিলেখক মনোনয়নে অথবা শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে পরীক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে কোন প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিলসহ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট আইনের আলোকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

নীতিমালা সংশোধন, পরিমার্জন বা অস্পষ্টতা দূরীকরণ: এ নীতিমালা বাস্তবায়নে কোন অসুবিধা দেখা দিলে বা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তি/সংগঠনসমূহের মতামত গ্রহণ করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here