গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও ফলাফল নিয়ে নাটকীয়তা এখনও শেষ হচ্ছে না। এরই মধ্যে এই নির্বাচনের ফলাফল ঘিরে দেশজুড়ে অস্থিরতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যে ফলাফল সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।
আবার আসন সংখ্যার দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও জয় দাবি করেছেন। এমন অবস্থায় সবাইকে ভোটারদের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের নারী শিক্ষা অধিকারকর্মী এবং শান্তিতে নোবেলজয়ী নারী মালালা ইউসুফজাই।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পাকিস্তানে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ দরকার বলে জানিয়েছেন মালালা ইউসুফজাই। একইসঙ্গে নির্বাচিত ব্যক্তিদের ভোটারদের সিদ্ধান্তকে অনুগ্রহের সাথে মেনে নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
২৬ বছর বয়সী এই নারী ২০১৪ সালে সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “পাকিস্তানের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার, যার মধ্যে ভোট গণনার স্বচ্ছতা এবং ফলাফলের প্রতি সম্মানও থাকবে।”
তিনি বলেন, “বরাবরের মতো আমি আজও বিশ্বাস করি, আমাদের অবশ্যই ভোটারদের সিদ্ধান্তকে অনুগ্রহের সাথে মেনে নিতে হবে। আমি আশা করি আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তারা- সরকার বা বিরোধী দল যেখানেই হোক না কেন- পাকিস্তানের জনগণের জন্য গণতন্ত্র এবং সমৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেবেন।”
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের মোট আসন সংখ্যা ২৬৬টি। এর মাঝে ২৫৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বলেছে, ফলাফল ঘোষণা করা ২৫৬টি আসনের মধ্যে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৩টি আসনে জয়ী হয়েছেন।
আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৪টি আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টিও ৫১টি আসনে জয় পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
মূলত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) দল হিসেবে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের দলীয় ‘ব্যাট’ প্রতীকের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এর আগে ইমরান খান এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উভয়ই শুক্রবার বিজয় ঘোষণা করেন। এই অবস্থায় কে পরবর্তী সরকার গঠন করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে।