কুয়েনার নদীর পানি প্রত্যাহার নিয়ে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সাম্প্রতিক নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে পাকিস্তানের পানি সংকট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপড়েনের শঙ্কাও।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলের জন্য জীবনরেখা (লাইফলাইন) হিসেবে পরিচিত এই নদীর গতিপথ পরিবর্তনের লক্ষ্যে বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে আফগানিস্তান। তালেবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক কমিশনের কারিগরি কমিটি ইতিমধ্যে কুয়েনার নদীর পানি নানগারহার অঞ্চলের দারুন্তা বাঁধে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে পানির প্রবাহ মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি পাকিস্তানের চিত্রাল জেলা থেকে উৎপন্ন হয়ে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেছে। পরবর্তীতে আবার নদীটি পুনরায় পাকিস্তানের সিন্ধু নদের সাথে মিলিত হয়েছে। খাইবার পাখতুনখাওয়ার সাধারণ মানুষের সেচ, পানীয় জল এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উৎস এই কুয়েনার নদী।
আগেই ভারত সিন্ধু নদের পানি সীমিত করে দেয়ায় পাকিস্তান এমনিতেই পানিশূন্যতায় ভুগছে। আফগানিস্তানের এই নতুন ডাইভারশন প্রকল্প খাইবার পাখতুনখাওয়ার কৃষি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, ভারতের সাথে পাকিস্তানের পানি বণ্টন চুক্তি থাকলেও আফগানিস্তানের সাথে এমন কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি বা সমঝোতা নেই। ফলে আইনি পথে তালেবানকে আটকানোর কোনো তাৎক্ষণিক উপায় ইসলামাবাদের হাতে নেই। দুই দেশের মধ্যে আগে থেকেই সীমান্ত সংঘাত ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষাপটে পানির এই নতুন বিরোধ পরিস্থিতিকে আরও সহিংস করে তুলতে পারে। নানগারহারের কৃষিজমি রক্ষার নামে নেওয়া এই প্রকল্প শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধংদেহী মনোভাব তৈরি করার আশঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে।
সূত্র: এনডিটিভি

