পর্যটকদের জন্য আধুনিকায়ন হচ্ছে পান্তুমাই

0

সীমান্তের ওপারে মেঘালয় পাহাড়। তার বুক চিরে নেমে এসেছে বিশাল ঝরনা। সেখান থেকে জলরাশি পাথরপথ গড়িয়ে মিশেছে এপারের লেকে। চারদিকে সবুজের সমারোহ। শিল্পীর তুলির আঁচড়ে ফুটে ওঠা ছবির মতো শান্ত-শ্যামল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সেই লেক। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরা সেই গ্রামের নাম ‘পান্তুমাই’। পান্তুমাইয়ের রূপ-লাবণ্যের টানে প্রতিদিন শত শত পর্যটক ছুটে আসেন। তবে প্রচারণার অভাব ও পরিকল্পিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় পান্তুমাই তার সৌন্দর্য মেলে ধরতে পারেনি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে। 

এবার স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে পান্তুমাইকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নেওয়া হয়েছে বৃহৎ পরিকল্পনা। এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম মেঘালয়ের ‘মাওলিনং’-এর আদলে পান্তুমাইকে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মাওলিনং থেকে ইকো ট্যুরিজম ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ নিতে সেখানে পাঠানো হচ্ছে প্রতিনিধি দল। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পান্তুমাইকে ফোকাস করা গেলে সিলেটের পর্যটন নিয়ে আকর্ষণ বাড়বে। সেই সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের বিকল্প কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ঝরনার পাশাপাশি প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করে মুগ্ধ হয়ে ফিরেছেন তারা। সিলেটের তাপমাত্রা যখন চরম তপ্ত থাকে তখনো পান্তুমাই গ্রামে গেলে মেলে শীতল হাওয়ার পরশ। গ্রামের পাশে মেঘালয় পাহাড়, ঝরনার জলধারা আর সবুজের সমারোহের কারণে এ গ্রামে সবসময় বিরাজ করে শীতল আবহাওয়া।

সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পরিকল্পনা ও প্রচারণার অভাব এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় ‘পান্তুমাই’ সিলেটের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের মতো পর্যটকদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। এর পর্যটন সম্ভাবনাকে এবার কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে দেশের প্রথম পর্যটন গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার। এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম ভারতের মেঘালয়ের ‘মাওলিনং’-এর আদলে ‘পান্তুমাই’কে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে ওই গ্রামের ১০ তরুণকে কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজমের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ তরুণ পর্যটন উদ্যোক্তাদের একটি দলকে ‘মাওলিনং’ পাঠানো হচ্ছে। তারা সেখান থেকে মাওলিনংয়ের ইকো ট্যুরিজমের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবেন।

‘পান্তুমাই’কে পর্যটনবান্ধব করতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক ও স্থপতি একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পান্তুমাইয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু, ওয়াশ ব্লক, বিশ্রামের জন্য পর্যটক ছাউনিসহ বেশকিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। ঝরনার বিপরীতে পান্তুমাই গ্রামের একটি মাঠে মাটি ভরাটেরও কাজ চলছে। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মামুন পারভেজ জানান, গ্রামের আশপাশের পতিত জমিতে ফুল চাষের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাহমিলুর রহমান বলেন, এতে সিলেটের পর্যটনশিল্প বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here