প্রথমবারের মতো পর্তুগাল বাংলাদেশ কমিউনিটির আয়োজনে কয়েক হাজার প্রবাসীর অংশগ্রহণে লিসবনের বাঙালি অধ্যুষিত মাতৃ মনিজ পার্কে অনুষ্ঠিত হল ‘মহান বিজয় দিবস উৎসব ২০২৪’। দিনব্যাপি প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে নৃত্য, গান, কবিতা, আবৃতি ও নানা দেশীয় তাঁত, পোশাক ও খাদ্য স্টলে নানা রকম আয়োজন ছিল উৎসবে।
গতকাল রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের মার্তিম মনিজ পার্কে বিজয় উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় জুন্তা ফ্রিগেসিয়া সান্তা মারিয়া মাইওরের প্রেসিডেন্ট ড. মিগেল কোয়েলু। বিকাল ২ টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। বিজয় দিবস কনসার্ট অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন রনি হোসাইন ও আব্দুল হাকিম মিনহাজ। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিজয় উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রানা তাসলিম উদ্দিন।
বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লিসবন দূতাবাসের প্রধান এস এম গোলাম সরওয়ার, পর্তুগালের লিসবন মিউনিসিপ্যাল এসেম্বলি মেম্বার ও সোশ্যালিস্ট পার্টি নেতা অ্যাডভোকেট ড. জোসে লেইতাও, জুন্তা ফ্রেগেসিয়া আল্কান্তারার প্রেসিডেন্ট ড্যাবিড আমাদো সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ মূলধারার বিভিন্ন পর্তুগীজ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় পর্তুগালের প্রবীণ কমিউনিটি নেতা রানা তাসলিম উদ্দিন ও কমিটির অন্যরা আগত অতিথিদের বাংলাদেশি পতাকা ও লোগোর উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা প্রদান করেন।
আলোচনায় জুন্তা ফ্রিগেসিয়া সান্তা মারিয়া মাইওর এর প্রেসিডেন্ট ড. মিগেল কোয়েলু বলেন, বাংলাদেশিরা তাদের বিজয়ের মাসে সুন্দরভাবে বিজয় উৎসব আয়োজন করছে। আমরা সাথে থাকতে পেয়ে আনন্দিত।
কমিউনিটি নেতা ও উদযাপন কমিটির প্রধান রানা তাসলিম উদ্দিন বলেন, পর্তুগালের ইতিহাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির এটাই সবচেয়ে বড় আয়োজন। আমি পর্তুগালের প্রথম পাঁচজনের একজন প্রবাসী। সে হিসেবে বলতে পারি পর্তুগালে এত বড় আয়োজন আজ পর্যন্ত হয়নি। এ আয়োজন প্রতিবছর আমাদের তরুণরা পালন করবে বলে আমি মনে করি। যা বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের মাঝে ইতিবাচকভাবে ফুটিয়ে তুলবে।
দ্বিতীয় পর্বে মূল আকর্ষণ ছিল সোনা পাখি খ্যাত শিল্পী ওয়াহিদের আয়োজন। যা দর্শকদের মাতিয়ে তোলে এবং বিজয় দিবসের উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তোলে। এর পাশাপাশি পর্তুগালের স্থানীয় শিল্পীরাও বাংলা গানে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।
পর্তুগীজ জাতীয় দুটি টেলিভিশন উপস্থিত হয়ে বিজয় উৎসবের সংবাদ প্রচার করেছে। পর্তুগিজরা বাংলাদেশের মনোমুগ্ধকর এ বিজয় উৎসব উপভোগ করেন। তারা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেন। তারা বাংলাদেশি আয়োজন প্রতি বছর করার জন্য সব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মেলায় ৪০টি এর মতো স্টলে বাংলাদেশি মানুষজন দেশিয় কৃষ্টি-সংস্কৃতি তুলে ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন পিঠা, হস্তশিল্প ও বাংলাদেশি পণ্যের সমারোহ নিয়ে হাজির হন। বিজয় উৎসবে মিডিয়া পার্টনার ছিল পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাব।
বিজয় উৎসব উদযাপন কমিটির অন্যরা হলেন রনি হোসাইন, আব্দুল হাকিম মিনহাজ, সাইফুল হক, মাসুম আহমদ, আজমল আহমেদ, শহীদ আহমদ (প্রিন্স), শাকির হাসান, এনামুল হক, আফতাব উদ্দিন ভূইয়া, আশরাফ, ইকবাল আহমদ কাঞ্চন, জসিম উদ্দিন, শিমুল সরকার, আমিরুল ইসলাম নয়ন, হাফিজ আল আসাদ, ছানি সুমন, নাহাজ, শামসুজ্জামান জামান, শামসুল হক, স্বপ্ননীল নিশান, শাহীন আহমদ, শিমুল সরকার প্রমুখ।