নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য গাজার চিকিৎসকদের মনোনয়ন

0
নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য গাজার চিকিৎসকদের মনোনয়ন

২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য গাজার চিকিৎসকরা মনোনীত হয়েছেন। পাশাপাশি অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেস্কা আলবানিজও এই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন।

মঙ্গলবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য মাতিয়াজ নেমেক আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি প্রকাশ করেন। তিনি নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর তা জনসমক্ষে তুলে ধরেন। নেমেকের বিবৃতি অনুযায়ী, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যসহ ৩৩টি দেশের প্রায় ৩০০ জন যোগ্য প্রস্তাবক এই মনোনয়নে স্বাক্ষর করেছেন।

এই মনোনয়ন সম্পর্কে নেমেক বলেন, এটি সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষাকারী ব্যক্তিদের প্রতি বিশ্বব্যাপী শ্রদ্ধার প্রকাশ। তিনি জানান, এই মনোনয়ন রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে।

নেমেক আলবানিজের মানবাধিকার রক্ষা ও আন্তর্জাতিক আইন সংরক্ষণে ভূমিকার প্রশংসা করেন। তার ভাষায়, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং তীব্র রাজনৈতিক চাপের মুখেও আলবানিজ তার মিশন অব্যাহত রেখেছেন। তিনি মনে করেন, আলবানিজ আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।

মনোনয়নের তালিকায় গাজাভিত্তিক চিকিৎসকরা রয়েছেন। তাদের মধ্যে ডা. হুসাম আবু সাফিয়া ও ডা. সারা আল সাক্কারের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা যুদ্ধ এবং সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেও জীবন ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন।

নেমেক জানান, গাজার স্বাস্থ্য অবকাঠামো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেলেও এসব চিকিৎসক প্রতিদিন আহত মানুষকে সেবা দিচ্ছেন। তিনি মনে করেন, চিকিৎসা নীতিমালা মেনে মানবিক দায়িত্ব পালনই তাদের নোবেল স্বীকৃতির উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

গাজার হামলা প্রসঙ্গে নেমেক বলেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত মানা হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১০ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী শত শতবার যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে। এতে অন্তত ৩৯১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১০৬৩ জন আহত হয়েছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৭০ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৭১ হাজার ১০০ জনের বেশি। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

নেমেক আরও বলেন, গাজায় চিকিৎসক ও মানবিক কর্মীদের স্বীকৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সমাজকে মানবাধিকার ও মানুষের মর্যাদা রক্ষার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এই মনোনয়ন বিশ্ব রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বানও বহন করছে।

সূত্র: মিডিল ইস্ট মনিটর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here