নিজের বিয়ে বন্ধ করতে ইউএনও অফিসে হাজির স্কুলছাত্রী, অতঃপর…

0

নিজের বিয়ে বন্ধ করতে ইউএনও অফিসে এসে লিখিত আবেদন দিয়েছেন নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। এদিকে তার আবেদন পেয়ে প্রশাসন ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি ১৮ বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে দিবেন না শর্তে লিখিত অঙ্গিকার করিয়েছেন পিতাকে। 

মঙ্গলবার পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। 

ছাত্রী নাজমিন আক্তার জানান, তার পরিবার থেকে তার বিয়ে ঠিক করেছিলো। কিন্তু তার বয়স কম এবং এটি বাল্য বিবাহ বলে সে এই বিয়েতে রাজি হয়নি। পরিবর্তীতে বিষয়টি তার মাদ্রাসার সুপারকে জানালে তিনি ইউএনও’র সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে তাকে লিখিত আবেদনসহ সেখানে পাঠান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়েটি বন্ধ করে দেন। তার এই বিয়ে বন্ধ হওয়ায় সে অনেক খুশি।

কদমতলা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মুহা: আজাহার উদ্দিন জানান, প্রশাসন থেকে বাল্য বিবাহ বন্ধ করার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে সচেতন করে আসছিলো। এছাড়া পিরোজপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেরও বাল্য বিবাহ রোধে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন। তাই শিক্ষার্থী নাজমিন তার বাল্যবিবাহের কথা মঙ্গলবার তাকে জানালে তিনি নাজমিনকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন নিয়ে পাঠান।

পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ জানান, শিক্ষার্থী নাজমিন তার কাছে নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য লিখিত একটি আবেদন নিয়ে আসেন। তার আবেদনে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুপার মুহা: আজাহার উদ্দিনের সুপারিশ ছিল। এরপর তিনি উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন। নিজের বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে শিক্ষার্থী নাজমিনের ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার। তাকে দেখে অন্য শিক্ষার্থীরাও অনুপ্রেরণা পাবে।

পিরোজপুর সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, শিক্ষার্থীর লিখিত আবেদনের কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে তাদের বাড়ি কদমতলায় গিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে শিক্ষার্থীর পিতা লিখিত অঙ্গিকার করেন তার মেয়ের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার মেয়েকে বিবাহ দিবেন না। 

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর পিতা মো: মোতালেব হোসেন জানান, তার মেয়ের বিয়ের কোনো আয়োজন তাদের বাড়িতে ছিলো না। শুধু মাত্র তার মেয়েকে দেখতে আসার কথা ছিলো। তার এলাকায় তার মেয়ের চেয়ে বয়সে ছোট অনেকের বিয়ে হয়েছে বিধায় তিনি তার মেয়েকে বিয়ের দেয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন মাত্র। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here