নতুন অধ্যায় শুরুর পথে কুমার শানুর কন্যা

0

টলিউড হোক বা বলিউড, তার সময়ে সাফল্যের শিখরে উঠেছিলেন কুমার শানু। তার কণ্ঠে বহু গান আজও জনপ্রিয়। ক্যারিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে শানুর পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন গায়ক-কন্যা শ্যানন কে।

চলতি বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে পা রাখতে চলেছেন শ্যানন। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর নেটমাধ্যমে হইচই শুরু হয়ে গেছে। গানবাজনার পাশাপাশি অভিনয় করেও নজর কেড়েছেন তিনি।

মুম্বাইয়ে জন্ম হলেও বিদেশে পাড়ি দেন শ্যানন। ছোটবেলা থেকেই গানবাজনার প্রতি আগ্রহ ছিল তার। সঙ্গীত নিয়ে পড়াশোনার জন্য লন্ডনের কলেজে ভর্তি হন শ্যানন।

চার বছর বয়সে মঞ্চে প্রথম গান করতে দেখা যায় শ্যাননকে। ১২ বছর বয়সে ভারত ছেড়ে ব্রিটেনে চলে যান তিনি। ব্রিটেন যাওয়ার পরেই একটি ইংরেজি গান মুক্তি পায় শ্যাননের।

শানুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখলেও বাংলা বা হিন্দি ছবিতে কখনও গান গাইতে দেখা যায়নি শ্যাননকে। বরং পপ সঙ্গীতশিল্পী হতে চেয়েছিলেন তিনি।

ওয়াশিংটন ডিসি, জামাইকা এবং ট্রেন্টন-সহ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠানে গান করেন শ্যানন। ২০১৮ সালে শ্যাননের প্রথম একক গান প্রকাশ পায়। ইউটিউবে নিজের গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেন শ্যানন।

সোনু নিগমের সঙ্গে একটি রোম্যান্টিক ঘরানার গান গেয়েছেন শ্যানন। ‘গিভ মি ইওর হ্যান্ড’ নামে একটি ইংরেজি গান লেখেন তিনি। এই গানের মাধ্যমে নিজের জীবনের কথাই ফুটিয়ে তুলেছেন শ্যানন।

এক পুরনো সাক্ষাৎকারে শ্যানন জানিয়েছিলেন, বিদেশে যাওয়ার পর বর্ণবৈষম্যের শিকার হন তিনি। শ্যানন যখন গান শিখতে যেতেন, তখন তার গায়ের রং নিয়ে কথা শুনতে হত। এমনকি, অডিশন দিতে যাওয়ার সময়েও অন্য চোখে দেখা হত শ্যাননকে।

শ্যানন বলেন, “আমাকে সব সময় অন্যের চেয়ে আলাদা ভাবে দেখতেন সকলে। বার বার নিজেকে প্রমাণ করতে হত। শুধু গায়িকা হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবেও নিজেকে প্রমাণ করতে হত আমাকে। অল্প বয়সে এত কিছু সামলাতে পারতাম না। রোজ বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে কাঁদতাম।”

শানু কন্যার দাবি, বারবার বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হতে আত্মবিশ্বাস ভেঙে গিয়েছিল তার। এখন অবশ্য এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন শ্যানন।

মানসিক অবসাদেরও শিকার হয়েছিলেন শ্যানন। সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে খোলসা করেছেন গায়িকা। অবসাদের শিকার হয়ে নিজের ক্ষতি করার চেষ্টাও করেন শ্যানন। এসব কিছুর জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে দায়ী করেন তিনি।

শ্যানন জানান, ১৪ বছর বয়সে প্রথমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা শুরু করেন তিনি। কিন্তু নেটব্যবহারকারীদের নেতিবাচক মন্তব্য মেনে নিতে পারতেন না। অন্যের মন্তব্য শুনে মনে আঘাত পেতেন তিনি। ধীরে ধীরে অন্ধকারের মধ্যে ডুবে যেতে থাকেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অন্ধকার দিক প্রকাশ্যে আসার পর মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরে শ্যাননকে। গায়িকার দাবি, সেই সময় পরিবার এবং কাছের বন্ধুরাই তার পাশে ছিলেন। শ্যানন সাক্ষাৎকারে বলেন, “প্রতিটি অন্ধকার সুড়ঙ্গের প্রান্তে আলো রয়েছে। তাই মন্তব্য শুনে মন খারাপ করার কোনও অর্থ নেই।”

২০২০ সালে ‘দ্য বিগ ফিড’ নামে একটি ইংরেজি ছবিতে প্রথম অভিনয় করতে দেখা যায় শ্যাননকে। হিন্দি ছবিতেও কাজ করেন তিনি। বিবেক শর্মা পরিচালিত ‘চল জিন্দেগি’ ছবিতে অভিনয় করেন শ্যানন।

বর্তমানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠানে গান করেন শ্যানন। বাবাকে সম্মান জানাতে তাঁর গাওয়া হিন্দি গান ‘পেহলা পেহলা পেয়্যার’-এর রিমেকও করেন তিনি।

ইতোমধ্যেই নিজস্ব অনুরাগী মহল তৈরি করেছেন শ্যানন। ইনস্টাগ্রামে অনুরাগীর সংখ্যা ৩৪ লাখের গণ্ডি পার করে ফেলেছেন তিনি। এখন কান চলচ্চিত্র উৎসব নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন গায়িকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here