নেত্রকোনায় ধানের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ফুলের চাষ। অন্যের বাগানে কাজ করে এখন নিজেই চাষ করছেন গোলাপের। চট্টগ্রাম থেকে এসে নিজ এলাকা নেত্রকোনায় করছেন গোলাপ চাষ। আর স্থানীয়ভাবে ফুলের দোকানিরাও বাড়তি খরচ ছাড়াই নিজ এলাকা থেকে সংগ্রহ করছেন গোলাপ। এদিকে প্রথমবারের মতো নেত্রকোনাতেও শুরু হয়েছে এর বাণিজ্যিক চাষ। চাষী জামাল উদ্দিন স্বপ্ন দেখছেন ১৪ ফেব্রুয়ারীকে ঘিরে ব্যবসা হবে লাখ টাকার।
সরেজমিনে দেখা মেলে ধানি জমির পাশেই সারিবদ্ধ ফুলের বাগান। প্রতিটি গাছে যেন ফুটে রয়েছে লাল গোলাপ। সৌন্দর্যের এই প্রতীক দেখাচ্ছে অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা। কৃষক জামাল উদ্দিন। দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে অন্যের বাগানে হাতে-কলমে শিখে চলে আসেন নিজ গ্রামে। জেলার সদর উপজেলার পাঁচপাই গ্রামে শখের বশে প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন গোলাপের বাগান। গেল ছয় বছরে গাছ লাগিয়েছেন প্রায় নয় হাজার। এখন প্রতিদিনই বাগান থেকে সরাসরি বিক্রি করছেন এক হাজারের বেশি ফুল। চলতি ফেব্রুয়ারী মাসেই শুধু ফুল বিক্রির আশা দেড় লাখ টাকার। বাগান পরিচালনা কাজেও কর্মসংস্থান হয়েছে আরও দুজনের। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে গোলাপের সমারোহ দেখতে আসছেন দর্শনার্থীরা। এদিকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এই ফুল জেলার সদর ছাড়াও যাচ্ছে মোহনগঞ্জ, দুর্গাপুর সহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলায়।
কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, বছরে চার মাস ফুল ফুটে। এটিকে গোলাপের মওসুম বলা হয়। অন্য মওসুমেই হয়ে পড়ে ব্যবসা। তিনি গত ছয় বছর ধরে এই ব্যবসায় সাফল্য পেয়ে এবার বাণিজ্যিক করেছেন। তার বাগান থেকেই দোকানিরা তুলে নিয়ে যায়। এতে দোকানিদেরও প্রচুর লাভ হয়। তিনি বলেন, চলতি মাসের ১৪ ফেব্রুয়ারী ভালোবাসা দিবসসহ নানা উৎসব থাকায় বেড়েছে ফুলের চাহিদাও। বাজারে প্রতি গোলাপ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বাগান থেকে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮ অথবা ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ টাকায়।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ি) উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, জেলায় ফুলের আবাদ একেবারেই কম। তবে এটি লাভজনক একটি পেশা। দুএকজন ফুল চাষাবাদে এগিয়ে আসছে। আমরা পরিদর্শন করে এসেছি। ধান চাষের পাশাপাশি ফুলসহ অন্যান্য ফসলে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ।