ধনকুবেরের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করল ইরান

0

 অর্থ আত্মসাতের দায়ে দোষী সাব্যস্ত ইরানি ধনকুবের বাবাক জানজানির সাজা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর  মঙ্গলবার এ ঘোষণা দিয়েছেন। ইরানের বিচার বিভাগ পরিচালিত বার্তা সংস্থা মিজানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইরানের তেল মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৬ সালে বাবাক জানজানি দোষী সাব্যস্ত হন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিদেশে তেল বিক্রির ২৭০ কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ তিনি সরকারকে হস্তান্তর করেননি। ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে তিনি ওই তেল বিভিন্ন দেশের কাছে বিক্রি করেছিলেন।

বাবাক জানজানি বলেছেন, তার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে ওই নগদ অর্থ তিনি হস্তান্তর করতে পারেননি।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর বলেন, তেহরানের বিচার বিভাগের প্রধান অনুরোধ করায় সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে। ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান এবং দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি সিদ্ধান্তটি অনুমোদন করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইরানের বিচার বিভাগ ঘোষণা করেছিল, জানজানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন। বিদেশে থাকা তার সম্পদগুলো শনাক্ত হয়েছে এবং তা ইরানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর পর থেকেই তিনি মুক্তি পেতে যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন ওঠে।

ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান গত ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন, প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বিদেশে এ ধনকুবেরের যে পরিমাণ সম্পদ আছে, তা দিয়ে তার দেনা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করা সম্ভব।

ইরানের সবচেয়ে সম্পদশালী ব্যক্তিদের একজন বাবাক জানজানি। তিনি ৬০টির বেশি কোম্পানি পরিচালনা করেন। এসব কোম্পানি প্রসাধনসামগ্রী থেকে শুরু করে তেলসহ বিভিন্ন জিনিস উৎপাদন করে। আছে ব্যাংকও।

একপর্যায়ে বাবাক জানজানি প্রায় ১ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছিলেন, যা ইরানের মতো কোনো দেশের ব্যবসায়ীর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ। কারণ, দেশটিতে অর্থনীতির বেশির ভাগটাই সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বেসরকারি খাতগুলোর ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ দিয়ে রাখা হয়েছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাহমুদ আহমাদিনেজাদের শাসনামলে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে বিদেশে তেল বিক্রিতে ইরান সরকারকে সহযোগিতার অভিযোগে জানজানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিতর্কিত পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে ইরানের সরকারকে চাপে রাখতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তখন এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

২৭০ কোটি ডলার পরিমাণ সরকারি অর্থ আত্মসাতের কারণে জানজানিকে ২০১৩ সালে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৬ সালে তাকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সূত্র : বিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here