জনপ্রিয় মার্কিন ড্রামা সিরিজ ‘দ্য ওয়্যার’-এর অন্যতম পরিচিত মুখ জেমস রানসোন মারা গেছেন। গত শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলেসে নিজ বাসভবনে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আত্মহত্যা করেছেন এ অভিনেতা।
জেমস রানসোন মূলত ডেভিড সাইমন পরিচালিত এইচবিও সিরিজ ‘দ্য ওয়্যার’-এর দ্বিতীয় সিজনে ‘জিগি সোবোটকা’ চরিত্রে অভিনয় করে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান। পরবর্তীতে তিনি সাইমনের আরেকটি আলোচিত সিরিজ ‘জেনারেশন কিল’-এ বাস্তব জীবনের মেরিন কর্পোরাল জোশ রে পারসনের চরিত্রে অভিনয় করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্টিফেন কিংয়ের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হরর মুভি ‘ইট চ্যাপ্টার টু’-তে এডি কাস্পব্রাক চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান।
রানসোনের আকস্মিক প্রয়াণে তার সহকর্মী এবং ভক্তদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী এবং ‘দ্য ওয়্যার’ ও ‘ট্রেমে’ সিরিজের অভিনেতা ওয়েন্ডেল পিয়ার্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন বার্তায় লেখেন, দুঃখিত ভাই, তোমার প্রয়োজনের সময় পাশে থাকতে পারলাম না।
বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা স্পাইক লি, ল্যারি ক্লার্ক এবং অস্কারজয়ী শন বেকারও তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। পরিচালক শন বেকার এক বার্তায় বলেন, আমি তোমাকে ভীষণ মিস করব।
জেমস রানসোনের স্ত্রী জেমি ম্যাকফি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি হৃদয়স্পর্শী বার্তায় তাদের দুই সন্তান—ছয় বছরের জ্যাক এবং চার বছরের ভায়োলেটকে জীবনের ‘সেরা উপহার’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, আমি তোমাকে আগেও হাজারবার ভালোবেসেছি এবং জানি যে আবারও ভালোবাসব। আমরা চিরকাল একসঙ্গেই থাকব।
১৯৭৯ সালে বাল্টিমোর শহরে জন্ম নেওয়া রানসোন ২০০২ সালে ‘কেন পার্ক’ ছবির মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। তবে তার জীবনের পথচলা সব সময় সহজ ছিল না। ২০২১ সালে তিনি প্রকাশ করেন যে, শৈশবে তিনি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সেই ট্রমা থেকে পরবর্তীতে তিনি অ্যালকোহল ও হেরোইন আসক্তির মতো কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছেন।
২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে রানসোন বলেছিলেন, অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার এই প্রক্রিয়াটি তার জন্য মাঝেমধ্যে যন্ত্রণাদায়ক ছিল। তিনি বলেছিলেন, আমাকে প্রায়ই এমন কিছু চরিত্রে অভিনয় করতে হতো যারা খুব একটা পছন্দের পাত্র ছিল না। সেই অস্বস্তিকর চরিত্রগুলোর মধ্যে বাস করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে আমি নিজেও মানসিকভাবে ভালো বোধ করতাম না।
তার প্রয়াণকে হলিউডের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবেই দেখছেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

