গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলি বাহিনীর অভ্যন্তরে বাড়ছে আত্মহত্যার হার। উত্তর ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আরও এক সেনার আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সংখ্যাটি ৬১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ জানিয়েছে, বাধ্যতামূলক সামরিক সেবায় থাকা এক সেনা সদস্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উত্তর ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে নিজের করা গুলিতে গুরুতর আহত হন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তারা বলেছে, ওই সেনার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে সামরিক পুলিশ একটি তদন্ত শুরু করেছে।
নেসেট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শুরু থেকে ২০২৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত অন্তত ২৭৯ জন ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি সাতটি প্রচেষ্টার মধ্যে একজন সেনা সদস্য মৃত্যুবরণ করছেন। হারেৎজ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ২০ জন এবং চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ১৬ জন সেনা সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। পরবর্তী মাসগুলোতে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পূর্বে স্বীকার করেছিল, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দায়িত্ব পালনকালে ৪৮ জন সেনা সদস্য নিজেদের জীবন শেষ করেছেন। তবে হারেৎজ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, এর বাইরেও অন্তত ১৩ জন সেনা সদস্য মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার কারণে যুদ্ধের বাইরে থাকাকালীন আত্মহত্যা করেছেন। গাজায় দীর্ঘায়িত সংঘাত এবং সেখানে সংঘটিত ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের প্রভাব এই আত্মহত্যার পেছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত অক্টোবরে ইসরায়েলি চিফ অফ স্টাফ ইয়াল জামির স্বীকার করেছেন, সেনাবাহিনীর ভেতরে মানসিক স্বাস্থ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। হাজার হাজার সৈন্য বর্তমানে মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। পাবলিক ব্রডকাস্টার ক্যানের তথ্য অনুসারে, গাজায় আহত হওয়া প্রায় ১৯ হাজার সেনার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি সদস্য পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি’র মতো গুরুতর মানসিক ব্যাধিতে ভুগছেন।
সূত্র: টিআরটি

