দিনাজপুর জেলায় নতুন আলু তোলার ধুম পড়েছে। জেলার অন্যান্য উপজেলার আগেই বিরামপুর ও হাকিমপুরে নতুন আলু তোলা প্রায় শেষ হয়েছে।
ফসলের মাঠজুড়ে কৃষক-কৃষাণিদের ব্যস্ততা এবং বিভিন্ন আলুর হাটে কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিলেও দাম নিয়ে চাষিদের মধ্যে রয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ। তবে ভরা মৌসুমে স্থানীয় নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বেড়েছে। ফলন সন্তোষজনক হলেও কৃষকদের দাবি, গত বছরের তুলনায় এবার আলুর দাম প্রায় অর্ধেক।
হাকিমপুরের মাধবপাড়া মোড়সহ বিভিন্ন হাটে দেখা যায়, পাইকাররা আড়তদারদের মাধ্যমে আলু কিনে ট্রাকে বোঝাই করছেন। মাঠ থেকে আলু তোলা, বস্তাবন্দি ও ট্রাকে লোড করার কাজে শত শত শ্রমিক ব্যস্ত সময় পার করছেন।
শ্রমিক শাহাবুল ইসলাম জানান, বস্তাপ্রতি ২৭ টাকা পারিশ্রমিক পেয়ে এই মৌসুমে তাদের ভালো আয় হচ্ছে। চাষিরা জানান, ক্যারেজ জাতের আলু বিঘাপ্রতি ৬০–৬৫ মণ এবং রোমানা জাতের ফলন হয় ৩৫–৪০ মণ। তবে রোমানা জাতের দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা লাভ হচ্ছে।
আলুচাষি আব্দুল মালেক জানান, গত বছর ক্যারেজ আলু মণপ্রতি ২ হাজার এবং রোমানা জাতের আলু ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এবার ক্যারেজ ৬০০ টাকা এবং রোমানা ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে খরচ উঠলেও লাভ করা কঠিন। চাষি জাহিদ ইকবাল রানা জানান, তিন বিঘা জমিতে রোমানা আলু চাষ করে বিঘাপ্রতি ৩৫ মণ ফলন পেয়েছেন এবং কিছু মুনাফা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা পাইকার রহিম উদ্দিন বলেন, এখানকার আলুর মান ভালো হওয়ায় ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনায় চাহিদা রয়েছে। তবে পরিবহন ও শ্রমিক মজুরি বাড়ায় ব্যবসার খরচও বেড়েছে।
এক আড়তদার হোসেন জানান, গত বছর প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি টাকার আলু কেনাবেচা হলেও এবার দাম কম থাকায় তা নেমে এসেছে ৩০ লাখ টাকায়।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায় বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে, তবে গত বছরের তুলনায় নতুন আলুর দাম কম।

