দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে অভিযোগ নেই ওকসের

0

সবশেষ অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর নায়কদের একজন, পাঁচ ম্যাচের তিনটি খেলেই ম্যান অব দা সিরিজ। সেই ক্রিস ওকস জায়গাই পাননি ইংল্যান্ডের পরের সিরিজের স্কোয়াডে। মজার ব্যাপার হলো, এই বাদ পড়া নিয়ে কোনো অভিযোগও নেই তার। একদিক থেকে এটিকে বরং নিজের জন্য ভালো বলেই মনে করেন ৩৪ বছর বয়সী পেস বোলিং অলরাউন্ডার।

গত জুলাইয়ে অ্যাশেজে ৩ টেস্ট খেলেই ১৯ উইকেট শিকার করেছিলেন ওকস। ব্যাট হাতেও রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তাতে ইংল্যান্ডের সিরিজ সেরার পুরস্কার কম্পটন-মিলার মেডেল জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু পরের সিরিজেই তার না থাকার মূল কারণ, সিরিজটি ভারতে। দেশের মাঠে ওকসের টেস্ট রেকর্ড যতটা উজ্জ্বল, ততটাই বিবর্ণ দেশের বাইরে। বিশেষ করে উপহাদেশে যতটুকু খেলেছেন, লাল বলের ক্রিকেটে কার্যকর হতে পারেননি একটুও। অ্যাশেজে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও তাই ভারত সিরিজের জন্য ওকসের ওপর ভরসা রাখতে পারেননি ইংল্যান্ডের নির্বাচকরা।

ওকস জানান, ভারত সফরে সুযোগ না পাওয়ার অনুভূতি মিশ্র…। যখনই কোনো টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়, সেখানে জায়গা পেতে মরিয়া থাকি স্বাভাবিকভাবেই। তবে পাশাপাশি আমার এই বয়সে… এছাড়া দেশের বাইরে আমার যা রেকর্ড, বিশেষ করে উপমহাদেশে… আমার মনে হয়, এটা ন্যায্য সিদ্ধান্ত।

দেশের মাঠে ২৮ টেস্ট খেলে ওকসের উইকেট ১১৩টি, বোলিং গড় দুর্দান্ত (২১.৮৮)। ইনিংসে ৫ শিকার ধরেছেন ৫ বার, একবার নিয়েছেন ম্যাচে ১০ উইকেট। দেশের বাইরে ২০ টেস্ট খেলে তার শিকার স্রেফ ৩৬ উইকেট। বোলিং গড় ৫১.৮৮, ৫ উইকেট নেই একবারও। ব্যাটিংয়েও দেশের মাঠে ১টি সেঞ্চুরি ও ৫টি ফিফটি করেছেন তিনি। ব্যাটিং গড় ৩৩.২৫। দেশের বাইরে ৩৭ ইনিংসে ফিফটি কেবল ১টি, ব্যাটিং গড় ২১.৯০।

উপমহাদেশে তার রেকর্ড তো আরও করুণ। বাংলাদেশে ২ টেস্ট খেলে তার উইকেট ৩টি, ভারতে ৩ টেস্ট খেলে ৩টি। ২০১৯ সালে নিউ জিল্যান্ডে ও পরের বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় সহায়ক কন্ডিশন পেয়ে কিছুটা ভালো করেছিলেন বটে। তবে সার্বিকভাবে দেশের বাইরে তার পারফরম্যান্স একদমই বাজে।

সবশেষ দেশের বাইরে খেলেছিলেন তিনি গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সেবার জিমি অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে বাদ দিয়ে মূল পেসার হিসেবে রাখা হয়েছিল ওকসকে। কিন্তু তিন টেস্টে কেবল পাঁচ উইকেট নিতে পেরেছিলেন প্রায় পঞ্চাশ গড়ে। সেই সফরে ফিরে তাকিয়ে এবং সামনের সময়ে নিজের ক্যারিয়ারের কথা ভেবে ভারত সফরের দলে না থাকাটাই নিজের জন্য ভালো হয়েছে বলে মনে করেন ওকস।

তিনি বলেন, আমি মনপ্রাণ উজাড় করেই বল করেছিলাম, তবে শরীর নিয়ে বেশ ধুঁকেছিলাম। ওই সময়টায় হাঁটু ফোলা ছিল। ওই সফরের পরই আমার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল এবং ৬ মাস ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে হয়েছিল। এখন ভারতে গিয়ে আমার বোলিংয়ের জন্য প্রতিকূল উইকেটে বোলিং করাটা এবং সামনের হাঁটুর ওপর অনেক চাপ নেওয়াটা এই ৩৪ বছর বয়সে আমার জন্য আদর্শ নয়। বিশেষ করে, সামনের দিনগুলিতে যখন সাদা বলের ক্রিকেটে অনেক খেলতে চাই। যদি একটি সংস্করণেই মনোযোগ থাকে, তাহলে ব্যাপারটি ভিন্ন। কিন্তু সব সংস্করণে খেলতে গেলে বিচক্ষণ সিদ্ধান্তই নিতে হয়।

ওকস জানালেন, তার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেই সবকিছু ব্যাখ্যা করেছেন নির্বাচকরা এবং তিনি তাতে সন্তুষ্ট। সামনের সময়টায় আমার সেরাটা কোথায় খেলতে পারি, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমাদের এবং টেস্ট ক্রিকেটে নিশ্চিতভাবেই তা ঘরের মাঠে। এটির মানে এই নয় যে, উপমহাদেশের বাইরে অন্য সফরগুলোয় আমাকে পাওয়া যাবে না। তবে এই মুহূর্তে এই সিদ্ধান্তে আমি স্বচ্ছন্দই আছি এবং এটিকেই যৌক্তিক মনে হচ্ছে। আমার সঙ্গে যোগাযোগটা ছিল খুবই ভালো, আমি জানি ক্যারিয়ারের কোথায় দাঁড়িয়ে আছি এবং আমার এতে কোনো সমস্যা নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here