দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট নির্ধাারিত সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার হবেন

0

দক্ষিণ কোরিয়ার অপসারিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত সংস্থার প্রধান ওহ ডং-উন। বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওহ ডং-উন বলেন, আমরা পরোয়ানাটি নির্বিঘ্নে কার্যকর করার চেষ্টা করছি। তবে প্রয়োজনে পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থার সহায়তা নিতে প্রস্তুত আছি।

তিনি সতর্ক করে বলেন, গ্রেফতারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধা দেওয়ার জন্য লোহার গেট বন্ধ করা বা ব্যারিকেড বসানোর মতো যে কোনো প্রচেষ্টা সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা হিসেবে গণ্য হবে, তিনি যোগ করেন।  

 গ্রেফতারে জল্পনা  
ইউন সুক-ইওলকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া এবং সময় নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। মঙ্গলবার সিউলের একটি আদালত ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুমোদন করে। এর আগে তার নিরাপত্তা দল কয়েকটি তল্লাশি পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধা দিয়েছিল। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইউনের নিরাপত্তা দলের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়া তাকে জোরপূর্বক গ্রেফতার করার সম্ভাবনা কম। গ্রেফতার হলে ইউন হবেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে গ্রেফতার হওয়া প্রথম ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট।  

 অভিযোগ ও শাস্তির সম্ভাবনা  
ইউনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বিদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশেষ করে ৩ ডিসেম্বর মার্শাল ল’ জারির ঘটনায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই অভিযোগে সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে আজীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড। ইউনের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, বিদ্রোহের তদন্তে তদন্তকারীদের যথাযথ ক্ষমতা নেই এবং গ্রেফতারি পরোয়ানাটি ‘অবৈধ ও অকার্যকর’। জাতীয় সংসদে ১৪ ডিসেম্বর ইউনের অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মোক বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে সংসদ ইউনের স্থলাভিষিক্ত হন ডাক-সু হানের অভিশংসন ঘটায় নতুন প্রশাসনিক সংকট তৈরি হয়।  

সাংবিধানিক আদালত এখন ইউনের অভিশংসন বহাল রাখবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করছে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আদালতের নয়জন বিচারকের মধ্যে অন্তত ছয়জনের সমর্থন প্রয়োজন ইউনের অভিশংসন বহাল রাখার জন্য।  ইউন তার মার্শাল ল’ জারির পদক্ষেপকে আইনসম্মত এবং প্রয়োজনীয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, এটি ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি’ ও বিরোধীদের বাধার মুখে দেশ রক্ষা করার জন্য করা হয়েছিল।  

দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক সংকট দেশটির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।  

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here