দক্ষিণ আফ্রিকা নিতে ফিলিস্তিনিদের কাছে ২ হাজার ডলার করে নিয়েছে রহস্যময় সংস্থা

0
দক্ষিণ আফ্রিকা নিতে ফিলিস্তিনিদের কাছে ২ হাজার ডলার করে নিয়েছে রহস্যময় সংস্থা

গাজা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা যেতে ১৩০ ফিলিস্তিনিকে মাথাপিছু ২ হাজার ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে—এ তথ্য দিয়েছে গাজার দুই বাসিন্দা, যারা গত সপ্তাহে বাসে করে গাজা থেকে ইসরায়েলি বিমানবন্দরে যান এবং সেখান থেকে ফ্লাইটে জোহানেসবার্গে পৌঁছান। দক্ষিণ আফ্রিকা বলছে, ঘটনাটি মনে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার বড় কোনো পরিকল্পনার অংশ।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রোনাল্ড লামোলা জানান, ফ্লাইটের আগমনের ‘সন্দেহজনক পরিস্থিতি’ তদন্ত করছে সরকার। লামোলা বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছেন এবং গাজায় ইসরায়েলের অভিযানকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করছেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি দেখে মনে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার বড় কোনো অ্যাজেন্ডা রয়েছে।

ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, তাদের সামরিক অভিযান হামাসকে লক্ষ্য করে, সাধারণ মানুষকে নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার সন্দেহ নিয়ে প্রশ্ন করলে ইসরায়েলি সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পরিষ্কার জানিয়েছেন—ফিলিস্তিনিরা যেতে চাইলে যেতে পারবেন, ফিরতে চাইলে ফিরতেও পারবেন। তবে কীভাবে ১৩০ জন দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছালেন, সে বিষয়ে মুখপাত্র ব্যাখ্যা দেননি।

গাজার বেসামরিক বিষয় তদারকি করা ইসরায়েলি বাহিনী কোগাট জানায়, গাজাবাসীরা একটি তৃতীয় দেশের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর গাজা ছাড়েন। তাঁদের বৈধ ভিসা ছিল বলেও দাবি করে তারা। কোগাটের মতে, প্রস্থানের নথিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবতরণের অনুমতিও যুক্ত ছিল। তবে লামোলার দাবি, তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় পারমিট ছিল না।

রয়টার্স আগে জানিয়েছিল, ইসরায়েল কিছুটা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে প্রায় এক হাজার ফিলিস্তিনিকে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। গাজার ওই দুই ব্যক্তি জানায়, তারা ‘আল-মাজদ ইউরোপ’ নামের একটি সংগঠনের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন। পরিবারভিত্তিক এই প্রস্তাবে পাসপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক ছিল।

সংস্থাটি হোয়াটসঅ্যাপে নিরাপত্তা ছাড়পত্র পাওয়ার কথা জানায় এবং পরে তারা বাসে কেরেম শালোম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রামন বিমানবন্দর থেকে রওনা হন।

৪২ বছর বয়সী রামজি আবু ইউসুফ, যিনি লিম্ফোমা ক্যানসারে আক্রান্ত, বলেন—চিকিৎসা ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য তাঁকে দেশ ছাড়তেই হতো। ২০২৪ সালের জুনে নুসেইরাত ক্যাম্পে ইসরায়েলি অভিযানের সময় তাঁর দুই মেয়ে নিহত হয় এবং বাড়িটিও ধ্বংস হয়ে যায়। তিনি স্ত্রী, এবং ৮, ১০ ও ১২ বছর বয়সী তিন সন্তানকে নিয়ে গাজা ছাড়েন।

রয়টার্স আল-মাজদ ইউরোপের ওয়েবসাইটে বার্তা পাঠালেও কোনো জবাব মেলেনি। যোগাযোগের জন্য কোনো ফোন নম্বরও নেই সংগঠনের সাইটে।

সোর্স: রয়টার্স

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here