জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপাদন এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে রেকর্ড ভাঙ্গার নজির স্থাপন করেছে ইরান। আর এভাবে দেশটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলোকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে।
কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্লুমবার্গ সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে আল-জাজিরা আরও লিখেছে, ফ্যাক্টস গ্লোবাল অ্যানার্জি নামক একটি পরামর্শদাতা সংস্থার মাধ্যমে পরিবেশিত জাহাজ ও বাজারের তথ্য বিষয়ক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের আলোকে দেখা গেছে ইরানের তরল গ্যাস বা এলপিজি রপ্তানি ২৮ শতাংশ বেড়ে ১১ মিলিয়ন বা এক কোটি ১০ লাখ টনে পৌঁছেছে।
এই কোম্পানির পূর্বাভাস অনুযায়ী ইরানের এলজিপি জ্বালানি রপ্তানি চলতি বছরে বেড়ে ১২ মিলিয়ন টন বা এক কোটি ২০ লাখ টনে উন্নীত হবে।
এটা স্পষ্ট মার্কিন সরকার বিভিন্ন দেশে ইরানের জ্বালানি তেলবাহী জাহাজগুলোকে আটকের প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশটির ওপর নিজস্ব নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের যে চেষ্টা করে আসছে তাও ব্যর্থ হয়েছে ইরানের পাল্টা অনুরূপ পদক্ষেপ নেয়ার মত নানা সাহসি পদক্ষেপের কারণে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত আবারও ইরান থেকে জ্বালানি তেল আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এদিকে, পাকিস্তানও ইরানের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক গ্যাস-পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস আমদানির প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন বাধা ও চাপ সত্ত্বেও। ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করলে ইরান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর পাকিস্তান অচল হয়ে থাকা ওই প্রকল্প আবারও সচল করার উদ্যোগ নেয়।
গত মাসে পাকিস্তান সরকার বহুল প্রতীক্ষিত আইপি পাইপলাইন প্রকল্পের কাজ শুরু করার ঘোষণা দেয়। এক দশকেরও বেশি সময় আগে এই প্রকল্পের ব্যাপারে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই হলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে এতদিন ইসলামাবাদ এটি বাস্তবায়নের কাজে হাত দেয়নি। ইরানের পক্ষ থেকে পাকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণ করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গত মাসে পাকিস্তানের মন্ত্রীসভার জ্বালানি বিষয়ক কমিটি ইরান-পাক সীমান্ত থেকে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণকাজের অনুমোদন দিয়েছে। ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত এ প্রকল্পের পাকিস্তান অংশের কাজ ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ সমাপ্ত করার কথা ছিল।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রকল্প থেকে সরে গেলে পাকিস্তান ইরানকে ১৮০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেবে বলে কথা রয়েছে।
সূত্র : পার্সটুডে।