সামরিক বিমানের ইতিহাসে যুগান্তকারী বাঁক বদল। প্রথম দেশ হিসেবে তুরস্কের বায়রাকতার কিজিলেলমা মনুষ্যবিহীন যুদ্ধ বিমান সফলভাবে আকাশ-থেকে-আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে উড়ন্ত লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করেছে। এটিই হচ্ছে বিশ্বে কোনো মনুষ্যবিহীন ফাইটার জেটের সফল এয়ার-টু-এয়ার কিল মিশন।
গত মাসের শেষের দিকে সিনোপের কাছে কৃষ্ণ সাগরের উপরে পরিচালিত এই লাইভ-ফায়ার পরীক্ষাটি বৈশ্বিক আকাশশক্তির দৃশ্যপটকে নতুন রূপ দিয়েছে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যবিহীন যুদ্ধবিমানগুলো ঐতিহ্যগত নজরদারি এবং ভূমি হামলার প্রথাগত ভূমিকা থেকে বেরিয়ে এসে আকাশ শ্রেষ্ঠত্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্ষেত্রে প্রবেশ করল।
কিজিলেলমার এই অর্জন মানববিহীন সিস্টেমের ভূমিকা এবং সীমা সম্পর্কে দীর্ঘদিনের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। পরীক্ষাটি কেবল একটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ নয় বরং একটি সম্পূর্ণ দেশীয় কিল চেইন (লক্ষ্য শনাক্তকরণ থেকে ধ্বংস পর্যন্ত প্রক্রিয়া) প্রদর্শন করেছে। তুরস্কের স্বদেশীয় এইএসএ রাডার দিয়ে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা এবং তুরস্কের নিজস্ব উন্নত গোকদোগান ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে তা ধ্বংস করার এই সক্ষমতা দেশটির সার্বভৌম সক্ষমতার এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
বহু বছর ধরে, ড্রোনগুলো মূলত গোয়েন্দা, নজরদারি, এবং সীমিত হামলার কাজেই ব্যবহৃত হতো। তবে কিজিলেলমা প্রথম থেকেই এয়ার-টু-এয়ার যুদ্ধে সক্ষমতা অর্জন করল। এটিই প্রথম মানব বিহীন আকাশ যান যেটি রাডার-নির্দেশিত আকাশ থেকে আকাশ ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে উৎক্ষেপণ ও গাইড করে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে পেরেছে।
এই সাফল্যটি অস্ট্রেলিয়ার এমকিউ-২৮ গোস্ট ব্যাট বা অন্যান্য লয়াল উইংম্যান প্রকল্পের মতো শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী উদ্যোগগুলো থেকে তুরস্ককে এগিয়ে রাখল।
তুরস্ক ইতিমধ্যেই বিশ্বের বহু দেশে সফলভাবে টিবি২ ড্রোন বিক্রি করেছে। কিজিলেলমা যদি রপ্তানিযোগ্য সিস্টেমে পরিণত হয়, তবে এটি আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
সূত্র: টিআরটি

