চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা আরও বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলোচনায় যুক্ত দুই জাপানি সরকারি কর্মকর্তা। খবর রয়টার্সের।
সম্প্রতি জাপানি পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি বলেন, চীন যদি তাইওয়ানে সামরিক হামলা চালায়, তবে জাপানও সামরিকভাবে জবাব দিতে পারে। এ মন্তব্যের পরই বেইজিং তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় এবং দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপানি কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার ট্রাম্প–তাকাইচির ফোনালাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তেজনা আর না বাড়ানোর অনুরোধ জানান। তবে তিনি কোনো নির্দিষ্ট দাবি করেননি এবং চীনের মতো মন্তব্য প্রত্যাহারের চাপও দেননি। জাপান সরকারও মন্তব্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে।
জাপানের মন্ত্রিসভার প্রধান সচিব মিনোরু কিহারা এ বিষয়ে রয়টার্সের কাছে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।টোকিওর কিছু নীতিনির্ধারক মনে করছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি রক্ষায় ট্রাম্প হয়তো তাইওয়ান ইস্যুতে তুলনামূলক নরম অবস্থান নিতে চান। এতে জাপানের নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও বাড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।
ট্রাম্প–তাকাইচির কথোপকথনের ঠিক আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেখানে শি জানান, বিশ্বব্যবস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তাইওয়ানের ‘চীনে ফিরে আসা’ একটি মূল লক্ষ্য।
তবে স্বাধীনভাবে পরিচালিত তাইওয়ান এতদিন ধরে বলে আসছে, তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার একমাত্র তাইওয়ানিজ জনগণের।
হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের হয়ে এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্ক ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ এবং সেটি জাপানের জন্যও ‘খুব ভালো খবর’। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে দুর্দান্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছি। বিশ্ব শান্তিতে রয়েছে—আসুন আমরা একে এভাবেই চালাই।’
জাপানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির সমালোচনা করে চীনের সরকারি দৈনিক পিপলস ডেইলি যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়, জাপানকে ‘আবার সামরিকতাবাদী পথে’ হাঁটা থেকে বিরত রাখতে।
তাকাইচির মন্তব্যকে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’ থেকে সরে আসা বলে মনে করছে চীন। টোকিওর কর্মকর্তারা বলছেন, মন্তব্যটি তিনি প্রত্যাহার করতে পারবেন না, ফলে সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

