তাইওয়ান ইস্যুতে আবারও বিদেশি হস্তক্ষেপের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। বুধবার (২৬ নভেম্বর) দেশটি সতর্ক করে বলেছে, তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপের চেষ্টা হলে তারা তা ‘চূর্ণ’ করে দেওয়া হবে। জাপান নিকটবর্তী একটি দ্বীপে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর বেইজিং এমন মন্তব্য করেছে।
চীনের তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয়ের মুখপাত্র পেং চিনগেন এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতীয় সার্বভৌত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য আমাদের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। তার মতে, চীনের তাইওয়ান অঞ্চলের পাশে জাপানের আক্রমণাত্মক অস্ত্র মোতায়েন করে ইচ্ছাকৃতভাবে আঞ্চলিক উত্তেজনা তৈরি করছে এবং সামরিক সংঘর্ষের উস্কানি দিচ্ছে।
বেইজিং তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে এবং দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনাও বাদ দেয়নি। অন্যদিকে, তাইওয়ান সরকার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে শুধুমাত্র তাইওয়ানের জনগণ।
রবিবার জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমির জানান, টোকিও তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দেশটির পশ্চিমতম দ্বীপ ইয়োনাগুনিতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যেখানে ২০১৬ সাল থেকে জাপানের একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইয়োনাগুনিতে মাঝারি পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েনের ফলে জাপানের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। ইয়োনাগুনির মতে, এই ইউনিটটি স্থাপনের ফলে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আক্রমণের সম্ভাবনা কমে যাবে।
তাইওয়ান ইয়োনাগুনিতে জাপানের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বলেছে যে এটি ‘তাইওয়ান প্রণালীতে নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়তা করে। তাইওয়ানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া উ বলেছেন, অবশ্যই, এটি আমাদের জাতীয় স্বার্থের জন্য সহায়ক কারণ জাপানের তাইওয়ানের প্রতি কোনও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বা শত্রুতা নেই।
তাইওয়ান রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম লাই চিং-তে বলেছেন, যে চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে আত্মরক্ষার জন্য দ্বীপটি ৪০ বিলিয়ন ডলারের সম্পূরক প্রতিরক্ষা বাজেট প্রবর্তন করবে। ২০২৬ থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বাজেটটি আট বছরের জন্য প্রণয়ন করা হবে। এছাড়া প্রতিরক্ষা ব্যয় দ্বীপের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

