ডেমক্র্যাটিক ২২ স্টেট ও ডিসিতে ট্রাম্পের নির্দেশ অকার্যকর

0

স্বল্প ও মাঝারি আয়ের মানুষের চিকিৎসা-সেবা, পুষ্টিকর খাদ্য ক্রয়ে সহায়তা, গৃহায়ণে ভর্তুকি, গরিব অথচ মেধাবি ছাত্রদের বৃত্তি, পাবলিক স্কুলে খাবার ক্রয়ন ইত্যাদি প্রকল্পে ফেডারেল অর্থ-সহায়তা বন্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে শুক্রবার অভিনব এক নিষেধাজ্ঞা দিলেন ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ জন জে ম্যাককনেল। গত সোমবার রাতে জারিকৃত এই আদেশের বিরুদ্ধে পরদিনই ওয়াশিংটন ডিসি ফেডারেল কোর্টের জজ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, যা সোমবার ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকার কথা। এরইমধ্যে জজ জন জে ম্যাককনেল যে নির্দেশ দিলেন সেটির কোন সময়-রেখা নেই। তবে পরবর্তী কোন বিধি তৈরি (কংগ্রেসে) না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঐ নির্দেশনা অকার্যকর থাকবে বলে উল্লেখ করেছেন রোড আইল্যান্ডের এই জজ। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই নির্দেশনা কার্যকর হবে ঐ আদালতে আবেদনকারি ২২ স্টেট এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে। এই স্টেটগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন ডেমক্র্যাটরা। এরফলে অপর ২৮ স্টেটের ভাগ্যে সোমবারের পর কী ঘটবে তা নিয়ে সংশয় বিরাজ করছে বলে শুক্রবার রাতে প্রাপ্ত সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে। উল্লেখ্য, নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর এবং ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রকাশ্যে হুমকি ও হুংকার দিয়েছেন যে, ডেমক্র্যাট শাসিত স্টেটসমূহকে তিনি প্রতি পদে নাজেহাল করবেন। বিষয়টি ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের জজ জন জে ম্যাককনেলকেও প্রভাবিত করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। এভাবে বিচারালয়কেও দলীয় লেজুড়বৃত্তিতে পরিণত করার প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সুশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপরোক্ত আদেশকে গণবিরোধী এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে অভিহিত করে মাননীয় জজ উল্লেখ করেছেন, কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত উপরোক্ত খাতের ফেডারেল তহবিল থামিয়ে দেয়ার ট্রাম্পের নির্দেশ মানার কোন প্রয়োজন নেই। গত মঙ্গলবার দায়েরকৃত ওয়াশিংটন ডিসি এবং ২২ স্টেটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ পাতার এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে, হোয়াইট হাউজের ম্যানেজমেন্ট ও বাজেট বিষয়ক অফিসের জারি করা নির্দেশ হচ্ছে ট্রাম্পের নিজস্ব রাজনৈতিক এজেন্ডা। তাই কংগ্রেসের অনুমোদিত বাজেট থামিয়ে দেয়ার আইনগত এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই। এ রায় ডেমক্র্যাট অধ্যুষিত স্টেটসমূহের বড় একটি বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে। স্টেটগুলো হচ্ছে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, রোড আইল্যান্ড, নিউজার্সি, ম্যাসেচুসেটস, আরিজোনা, কলরাডো, কানেকটিকাট, ডেলওয়ারে, হাওয়াই, মেইন, ম্যারিল্যান্ড, মিশিগান, মিনেসোটা, নেভাদা, নর্থ ক্যারলিনা, নিউ মেক্সিকো, ওরেগণ, ভারমন্ট, ওয়াশিংটন, উইসকনসিন এবং ওয়াশিংটন ডিসি। 

প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য যে, সোমবারের ঐ নির্দেশনার বিরুদ্ধে সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়ার পরই বুধবার হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারলাইন লেভিট বলেছেন, এটা ফেডারেল ফান্ডিং বন্ধের নির্দেশনা নয়। প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে কোন ফান্ডিং বন্ধ হয়নি, সবকিছু চালু আছে এবং থাকবে। প্রেস সেক্রেটারির এমন অভিমতের সামান্য হলেও কিছুটা প্রতিফলন ঘটেছে উপরোক্ত রায়ে। জাজ ম্যাককনেল উল্লেখ করেছেন যে, অন্য কোন নামেও ফেডারেল প্রকল্পসমূহে ফান্ডিং বন্ধের নয়া কোন আদেশ জারি করতে পারবেন না। 
এদিকে, ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতা কংগ্রেসম্যান হাকিম জেফরী শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের জারিকৃত আদেশসমূহের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, আদালতের পাশাপাশি কংগ্রেস ও রাজপথেও আমরা সরব থাকবো। 

প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য যে, জন্মগত সিটিজেনশিপের অধিকার হরণের যে নির্দেশ ইতিপূর্বে ট্রাম্প জারি করেছিলেন তা আদালত রুখে দিয়েছে। অর্থাৎ হাউজ এবং সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে হোয়াইট হাউজে অধিষ্ঠিত হয়েও ট্রাম্প যা খুশি তা করতে সক্ষম হচ্ছেন না। শুধুমাত্র অবৈধ অভিবাসী দমনের ক্ষেত্রে উভয় পার্টির সমর্থন পেয়েছেন এবং তা অব্যাহত রয়েছে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here