অভিবাসন নীতি নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক চাপের মুখে যুক্তরাজ্যের লেবার সরকার। এবার তারা ডেনমার্কের কঠোর অভিবাসন মডেল অনুসরণের পরিকল্পনা করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নৌকাযোগে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ব্রিটিশ সরকার এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ সম্প্রতি একটি উচ্চ-পর্যায়ের টিমকে ডেনমার্কে পাঠিয়েছেন। উদ্দেশ্য হলো ডেনমার্ক কীভাবে পরিবার পুনর্মিলন সীমিত করে, শরণার্থীদের অস্থায়ী অনুমতি দেয় এবং কড়া শর্তে স্থায়ী বসবাস নিশ্চিত করে; তা পর্যালোচনা করা।
ডেনমার্ক গত দুই দশকে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর ইমিগ্রেশন আইন গড়ে তুলেছে। পরিবার পুনর্মিলন চাইলে সেখানে ২৪ বছর বয়স, ভাষা পরীক্ষা এবং কয়েক বছরের চাকরির মতো শর্ত পূরণ করতে হয়। এমনকি কিছু এলাকায় বসবাস করলে যেখানে অ-ইউরোপীয় নাগরিকের সংখ্যা বেশি সেখানে বাস করা মানুষের পরিবার পুনর্মিলন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে বর্তমানে শরণার্থীরা পাঁচ বছর থাকার অনুমতি পান। পরে তারা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী এই সময়সীমা দ্বিগুণ হয়ে ১০ বছর হতে পারে। ইংরেজি দক্ষতা এবং আয়ের শর্তও কঠোর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, অভিবাসন বিরোধী দল রিফর্ম ইউকের জনপ্রিয়তা বাড়ার ফলে লেবার সরকারে চাপ তৈরি হয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, দেশের জনগণের ৫১ শতাংশ এখন অভিবাসনকে সবচেয়ে বড় জাতীয় সংকট হিসেবে দেখছে।
তবে লেবার পার্টির ভেতরেই এই পদক্ষেপের সমালোচনা চলছে। দলটির কিছু নেতা বলছেন, ডেনমার্কের মডেল অনুসরণ করা মানে অতি-ডানপন্থী রাজনীতির দিকে ঝুঁকে যাওয়া। তাদের মতে, এই নীতি বৈষম্যমূলক এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউরোপে বর্তমানে অভিবাসন নীতি নিয়ে বিভক্ত। জার্মানি, স্পেন, ইতালি ও ফ্রান্স অধিক সংখ্যক অভিবাসী গ্রহণ করলেও, ডেনমার্ক, হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়া সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পুনর্মিলনে কঠোরতা আরোপ করছে।

