টেকনাফে দুই কৃষককে অপহরণের পর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

0

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ের পাদদেশে পানের বরজে কাজ করার সময় দুই কৃষককে কুপিয়ে জখম ও অন্য দুই কৃষককে অপহরণের পর মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা অপহরণের শিকার মো. রিদুয়ানের বাবা মো. সরোয়ারের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগযোগ করে। তখন মুক্তিপণ হিসেবে ওই টাকা দাবি করে। দাবি করা টাকা না দিলে দুজনের লাশ নিতে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছে। অন্যদিকে, জখম হওয়ার পর পালিয়ে আসা দুজন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. রফিক গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। 
গত রবিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ের পাদদেশে অপহরণ ও
এই হামলার ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য মো. রফিক বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে পাহাড়ের পাদদেশে পানের বরজে কাজ করতে যান ওই ৪জন। এ সময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে তাদের ঘিরে ধরে অপহরণের চেষ্টা করলে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা দুজনকে কুপিয়ে জখম করে এবং অপর দুজনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা যাওয়ার সময় কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

আহত ব্যক্তিরা বলেন, সন্ত্রাসীরা সবাই মুখোশ পরা অবস্থায় ছিল। তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ছিল। কোনোরকমে তারা দুজনে পালিয়ে আসতে পারলেও রহিম উদ্দিন ও রিদুয়ানকে সন্ত্রাসীরা ধরে নিয়ে যায়।

রিদুয়ানের বাবা সরওয়ার বলেন, ‘আমরা খুবই নিতান্ত অসহায় ও গরিব। নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় জীবিকার তাগিদে পাহাড়ে পানের বরজ করে কোনোরকমে সংসার চালাই। মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করছে, কিন্তু ঘরে তো ৫ হাজার টাকাও নেই। আমার স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে অক্ষত অবস্থায় দ্রুত উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ ব্যাপারে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মশিউর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। এরপরও পুলিশ কিন্তু বসে নেই। খবর পাওয়ার পর পর পুলিশের বিশেষ একটি দল অপহৃতদের উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে আশপাশে ও সন্দেহভাজন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।’

উল্লেখ্য, গত ৬ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬২ জন ব্যক্তিকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ২৮ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here