টালমাটাল মার্কিন শেয়ারবাজার, অস্ট্রেলিয়া-ইউরোপেও নিম্নমুখী সূচক

0

মার্কিন অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপরই উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে মার্কিন শেয়ারবাজারে। ধস নেমেছে ওয়াল স্ট্রিটে। 

পশ্চিমা বিশ্বের একাধিক দেশের শেয়ারবাজারেও বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত পড়েছে। ২০২২ সাল থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সোমবার সর্বকালীন পতন হয়েছে ন্যাসড্যাক-এর সূচকে। ‘এস অ্যান্ড পি ৫০০’-এর সূচকেও ফেব্রুয়ারির সর্বোচ্চ স্থান থেকে আট শতাংশ পতন হয়েছে। 

সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া ট্রাম্পের এক সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে অনিশ্চয়তার মেঘ জমতে শুরু করেছে। সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি তিনি। অনুমান করা হচ্ছে, ট্রাম্পের ওই সাক্ষাৎকারেরই প্রভাব পড়ছে ওয়াল স্ট্রিটে।

গত রবিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি ট্রাম্প। যার ফলে মার্কিন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আরও উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তারা বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে ট্রাম্পের মন্তব্যের পরে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের বিনিয়োগকে সুরক্ষিত করার চেষ্টায় ব্যস্ত। 

সংবাদমাধ্যমকে কেন্টাকির বাজার বিশেষজ্ঞ রস মেফিল্ড জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনকে দেখে মনে হচ্ছে যেন শেয়ারবাজারে পতন রুখতে তারা কিছু করতে চাইছে না। নিজেদের বৃহত্তর লক্ষ্য পূরণের জন্য তারা হয়তো মন্দাকেও মেনে নেবে।

ওই সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তার নতুন শুল্কনীতি দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, “এই ধরনের কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে আমি পছন্দ করি না। আমরা যেটা করছি, সেটা খুব বড় একটা কাজ। ফলে এখন একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা চলছি। আমরা আমেরিকার সম্পদ পুনরুদ্ধার করছি। এটা খুব বড় কাজ।” এই লক্ষ্যে পৌঁছতে যে কিছুটা সময় লাগবে, তা-ও মেনে নিয়েছেন ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের পরই সোমবার ওয়াল স্ট্রিটে টালমাল চিত্র ধরা পড়ে। সোমবার বাজার বন্ধের সময়ে ‘এস অ্যান্ড পি ৫০০’-এর সূচক ২.৭ শতাংশ নীচে ছিল, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন এবং ডিসেম্বরের পর থেকে একদিনে সবচেয়ে বেশি হারে পতন। 

‘ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ’-এর সূচকও ২ শতাংশ নেমেছে, যা গত বছরের ৪ নভেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন। ন্যাসড্যাক-এর সূচকে সোমবার ৪ শতাংশ পতন হয়েছে, যা গত প্রায় ছ’মাসের হিসাবে সর্বনিম্ন।

ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ার দর প্রায় ১৫.৪ শতাংশ কমে গেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপ প্রস্তুতকারী সংস্থা এনভিডিয়ার শেয়ার দর কমেছে পাঁচ শতাংশেরও বেশি। এছাড়া মেটা, অ্যামাজন, অ্যালফাবেটের মতো প্রথম সারির প্রযুক্তি সংস্থাগুলোরও শেয়ার দরে পতন হয়েছে। শুধু আমেরিকাতেই নয়, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপেও মঙ্গলবার বাজার খোলার সময়ে শেয়ার বাজার নিম্নমুখী ছিল। জাপানে নিকি ২২৫-এর সূচক ২.৫ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপির সূচক ২.৩ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার এস অ্যান্ড পি/এএসএক্স ২০০-র সূচক ১.৮ শতাংশ কম ছিল। ইউরোপীয় দেশগুলোর শেয়ার বাজারের সূচক স্টক্স ৬০০-এর সূচকও ১.২৯ শতাংশ কম ছিল সোমবার। সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন, আল-জাজিরা, এবিসি, জিবি নিউজ, সিটি এএম, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, নিউজ অস্ট্রেলিয়া, ফোর্বস, এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here