দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং এখন দেশের টাক মাথা মানুষের জন্য লড়াইয়ে নেমেছেন। তিনি দাবি তুলেছেন দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য বিমা থেকেই চুল পড়া চিকিৎসার খরচ দেওয়া হোক। তিনি মনে করছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় টাক মানুষের সমস্যা শুধু সৌন্দর্য নয়, এটি এখন মানুষের আত্মবিশ্বাস ও টিকে থাকার লড়াই।
এক সরকারি ব্রিফিংয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই প্রস্তাব দেন। তাঁর ভাষায়, একসময় চুল পড়াকে সাজসজ্জা হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু এখন সমাজে এটি বিশাল মানসিক চাপে ফেলছে মানুষকে।
এখন পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য বিমা শুধু রোগজনিত কারণে চুল পড়লে খরচ দেয়। কিন্তু বংশগত কারণে টাক পড়লে কোনো সুবিধা মেলে না। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জং ইউন কিয়ং জানিয়েছেন, যেহেতু বংশগত টাক পড়া জীবন বা স্বাস্থ্যের সরাসরি হুমকি নয়, তাই এটি বিমার আওতায় আনা হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট লি প্রশ্ন তুলেছেন কেন বংশগত সমস্যাকে রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।
দক্ষিণ কোরিয়া কঠোর সৌন্দর্যের মানদণ্ডের দেশ হিসেবে পরিচিত। সেখানে টাক পড়াকে সামাজিক অপমান হিসেবে দেখা হয়। সরকারি তথ্য বলছে, গত বছর চুল পড়ার সমস্যায় হাসপাতালে যাওয়া ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ছিল ৪০ শতাংশ।
৩৩ বছর বয়সী লি ওন উ জানান, সামনের চুল কমে যাওয়ায় তিনি কোনো হেয়ার স্টাইল করতে পারেন না। তাঁর ভাষায়, এতে আত্মবিশ্বাস পুরোপুরি ভেঙে যায়।
প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে। কেউ তাঁকে ইতিহাসের সেরা প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রশংসা করছেন। আবার কেউ দেখছেন এটি ভোট পাওয়ার সহজ কৌশল হিসেবে।
সমালোচকেরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য বিমা গত বছরে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়ে। তাদের ভাষায়, দেশে স্যানিটারি প্যাড বা স্তন ক্যানসারের ওষুধ দিতে গিয়েই অর্থ সংকট দেখা দেয়। সেখানে টাক চিকিৎসায় বিমা সুবিধা দেওয়া একধরনের অবাস্তব চিন্তা।
৩৩ বছর বয়সী লি জে মিউং ২০২২ সালের নির্বাচনে হারলেও এবার জিতেছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, ২০২৬ সালের স্থানীয় নির্বাচন সামনে রেখে তরুণ পুরুষ ভোটারদের খুশি করতে তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি

