ইরান জানিয়েছে, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির সঙ্গে তাদের পরবর্তী পরমাণু আলোচনা ১৩ জানুয়ারি জেনেভায় অনুষ্ঠিত হবে। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি দেশটির সেমি-অফিশিয়াল সংবাদ সংস্থা ইসনাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নতুন এ আলোচনার উদ্দেশ্য হলো বিরোধ নিষ্পত্তি এবং পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে সহযোগিতার ভিত্তিতে সমাধানে পৌঁছানো। তবে ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, চাপের মুখে নয়, বরং আলোচনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (IAEA) সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে চায়।
ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করছে। গত ডিসেম্বরেই IAEA-এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় নিয়ে গেছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি ইরানের এই কার্যক্রমের কঠোর সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, কোনো বেসামরিক উদ্দেশ্য ছাড়াই ইরান এমন বিপুল পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুদ করছে। তারা ইরানের ওপর পুনরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনাও উত্থাপন করেছে।
২০১৫ সালে ইরান একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সই করেছিল, যাতে তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করার প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে সরে আসেন এবং ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এতে ইরানও চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে, ইউরেনিয়াম মজুদ বৃদ্ধি এবং উন্নত প্রযুক্তির সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করে।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন চুক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য ইরানের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা চালালেও এখনও পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছেন, আমাদের একটি চুক্তি করতেই হবে, কারণ এর বিকল্প বিপর্যয়কর হবে।
ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে এবং অস্ত্র তৈরি করার কোনো ইচ্ছা নেই। আগামী ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য আলোচনা এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিরসনে কতটুকু সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল