জুসে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে লুট, ৩ আসামির ৫ বছরের কারাদণ্ড

0

মুন্সিগঞ্জের সদরে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে ঘরে থাকা মূল্যবান স্বর্ণালংকার ও টাকা লুটের মামরায় ৩ আসামিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মুন্সিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার মধ্যম কলাকোফা গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে রিয়াজউদ্দিন সুমন (২৫), মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে লিটন মিয়া (৪৫) ও লিটন মিয়ার ছেলে বিরাজুল ইসলাম (২৮)। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী বুলবুল আহম্মেদ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর নেত্রকোনার সদর উপজেলার খালইস্ট এলাকার ভাড়াটিয়া একলাস মিয়ার (৪৫) কনফেকশনারি দোকানের ব্যবসা পরিচালনার জন্য রিয়াজউদ্দিন সুমনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।  ২৯ অক্টোবর বাদী খালইস্ট ভাড়া বাড়িতে তার ৩ কন্যা ও শাশুড়িকে রেখে, রিয়াজউদ্দিন সুমনকে তাদের দেখে রাখার দায়িত্ব দিয়ে নেত্রকোনায় জরুরি কাজে চলে যান। একই তারিখ রাতে রিয়াজ উদ্দিন সুমন দুইজনকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

ওই দিন রাতে রিয়াজউদ্দিনসহ লিটন মিয়া ও বিরাজুল ইসলাম মিলে একলাস মিয়ার ঘরে থাকা ৩ কন্যা জান্নাত আক্তার, একামনি ও কেয়া মনিসহ বাদীর বৃদ্ধা শাশুড়িকে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন। এরপর ঘরে আলমারিতে রক্ষিত ৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১১ লাখ টাকা নিয়ে আসামিরা পালিয়ে যান। পরে বাদীর ৩ কন্যা ও শাশুড়ি স্বাভাবিক হলে একলাস মিয়া বাড়িতে এসে ঘটনার বিস্তারিত জেনে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ করেন।

পরে থানা পুলিশ আসামিদের খবর দিলে তারা থানায় উপস্থিত হয়ে ঘটনা স্বীকার করেন। বাদীর সমস্ত কিছু ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন কিন্তু ফেরত না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর মুন্সিগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকাবস্থায় ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে এই রায় ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী একলাস মিয়া বলেন, আমি বিশ্বাস করে আসামি রিয়াজউদ্দিন সুমনকে ব্যবসার দায়িত্ব দিই। আমি ও আমার স্ত্রী জরুরি কাজে নেত্রকোনাই গিয়েছিলাম। ঘটনার দিন রিয়াজউদ্দিন আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করে লিটন ও বিরাজুলকে আমার বাড়িতে এনে আমার ৩ মেয়ে ও শাশুড়িকে অচেতন করে ঘরে থাকা ৩ ভরি স্বর্ণ ও ১১ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আসামিরা থানায় এসে সমস্ত টাকা ও স্বর্ণ ফেরতের আশ্বাস দিয়ে আর দেয়নি। এ ঘটনায় আমি মামলা করলে আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে সাজার আদেশ দিয়েছেন। আমি বিচারকের রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here