‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল’ গঠন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই সেলে একজন সম্পাদক রয়েছেন। সেলের অধীন থাকছে চারটি টিম। এগুলো হলো ‘আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনবিষয়ক টিম’, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ডকুমেন্টেশনবিষয়ক টিম’, ‘বিচারিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে শিক্ষানবিশ আইনজীবী টিম’ ও ‘শহীদি স্মারক নির্মাণ টিম’।
বুধবার (০৮ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই সেল ও টিমের ঘোষণা দেন সংগঠনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। নবগঠিত এই সেলের সম্পাদক ও চারটি টিমে মোট সদস্য আছেন ৪৯ জন৷
সেল ঘোষণার আগে আরিফ সোহেল বলেন, আমরা মনে করেছিলাম, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তাঁদের বিষয়টি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ ব্যাপারে যে উদ্যোগগুলো নেওয়া হয়েছে, তা একেবারেই অপ্রতুল। আমরা এটাও লক্ষ করেছি, জুলাই অভ্যুত্থানে কীভাবে আন্দোলন দানা বাঁধল, কীভাবে সেটা চূড়ান্ত পরিণতির দিকে পৌঁছাল, এ ব্যাপারে যথাযথ ডকুমেন্টেশনও দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে সেটাকে টিকিয়ে রাখার যথেষ্ট কর্মতৎপরতা নেই।
আরিফ সোহেল বলেন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের যে গুন্ডাপান্ডারা জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা, বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও ‘শাপলা ম্যাসাকারের’ মতো ঘটনার তদন্ত ও বিচার- এসব ক্ষেত্রে শ্লথগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। এছাড়া গণঅভ্যুত্থানের আদর্শকে সব সময় জাগরূক রাখতে শহীদ মিনার, স্মৃতিস্তম্ভ, শহীদি ফলক ইত্যাদি তৈরি করা দরকার ছিল। এ ধরনের উদ্যোগও তেমন নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল ঘোষণা করছেন।
পরে সেলের সম্পাদক ও বিভিন্ন টিমের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন আরিফ সোহেল। এই সেলের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাসান ইনাম। সেলটির অধীন অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনবিষয়ক ১৯ সদস্যের, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ডকুমেন্টেশনবিষয়ক ১৬ সদস্যের, বিচারিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের ৫ সদস্যের এবং শহীদি স্মারক নির্মাণের লক্ষ্যে ৮ সদস্যের টিম কাজ করবে।
আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন বিষয়ক টিমের সদস্যরা হলেন- ০১. হাসান আলী (শহীদ আরাফাতের ভাই), ০২. ইয়াছিন মিয়া (আহত যোদ্ধা), ০৩. আমানুল্লাহ ফারাবী (আহত যোদ্ধা), ০৪. রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, ০৫. নাফিসা ইসলাম সাকাফি, ০৬. আনিসুর রহমান, ০৭. রবিউস সানি শিপু, ০৮. মাহমুদুল হাসান মঈন, ০৯. হুজাইফা সম্রাট, ১০. আলী আব্বাস শাহিন, ১১. আব্দুল বাসেত, ১২. শাকিল আলী, ১৩. আবুল কাশেম ওভি, ১৪. মো: মেহেদি হক মামুন, ১৫. সাইদুর রহমান শাহিদ, ১৬. সুমন বসুনিয়া, ১৭. আশা তালুকদার, ১৮. তাহমিনা আক্তার মিম, ১৯. সালোয়া আক্তার এ্যানি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টেশন বিষয়ক টিমের সদস্যরা হলেন- ০১. স্মৃতি আফরোজ সুমি, ০২. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ০৩. সালমান সা’দ, ০৪. অদ্বিতীয়া মুকুল, ০৫. আব্দুল্লাহ আরিয়ান, ০৬. শেখ ফাহিম ফয়সাল, ০৭. দোলা ইসলাম, ০৮. তানভীর ইসলাম অসি, ০৯. রিদওয়ান মুহসীন, ১০. তৌহিদুল ইসলাম ভূঞা, ১১. মো: সাইদুর রহমান সোহাগ, ১২. ওয়াসিমুল হাসান শাতিল, ১৩. মুঈনুদ্দিন গাউছ, ১৪. শাহাদাত হোসেন, ১৫. মো: সজিব হোসাইন, ১৬. আর্ফিয়াস আল দ্বীন।
বিচারিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ লক্ষ্যে গঠিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী টিমের সদস্যরা হলেন- ০১. ফারদীন হাসান আন্তন, ০২. নোমান বিন হারুন, ০৩. জহিরুল ইসলাম, ০৪. আরিফুল ইসলাম বিজয়, ০৫. জাকি হাসান ইফতি।
শহীদী স্মারক নির্মাণের লক্ষ্যে গঠিত টিমের সদস্যরা হলেন- ০১. মো: রাঈদ হোসেন, ০২. এস আই শাহিন, ০৩. মনিরুজ্জামান মাজেদ, ০৪. ফারহান হাসান বর্ণ, ০৫. হৃদয় সজন, ০৬. তাজহারুল ইসলাম, ০৭. দেলোয়ার হোসেন, ০৮. সাখাওয়াত হোসেন।