জুম চাষে এবার ফলন বিপর্যয়

0

সবুজ পাহাড়ের চূড়ায় পাকা ধানে হলুদ রূপ নিয়েছে। ধানের পাশাপাশি জুমে হলুদ, মারফা, আদা, মরিচ, কচু, মিষ্টিকুমড়া, তিল, ভুট্টা, বরবটিসহ প্রায় ৪০ জাতের সবজির চাষ করেছেন পাহাড়ি জুম চাষিরা। জুমের উৎপাদিত খাদ্যশস্য দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি জুমে উৎপাদিত সবজি ও কৃষিজ পণ্য বিক্রি করে সংসার চালায় চাষিরা। তবে জুম ফসলের বীজ রোপণের সময় বৃষ্টিপাত কম হওয়ার ফলে এবার ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন কমেছে। ফলন কম হওয়ায় হতাশ চাষিরা।

দীঘিনালা উপজেলার ৮ মাইল এলাকায় ৪ একর পাহাড়ি টিলা ভূমিতে জুম চাষ করেছেন কৃষক ললিত ত্রিপুরা। তিনি বলেন, এবার ধানের উৎপাদন কম। জুমে চারা রোপণের সময় ঠিকমতো বৃষ্টি হয়নি। পরে অসময়ে বৃষ্টিপাত বেশি হয়েছে। ধান পাকার পর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে। গত বছরের তুলনায় এবার অনেক কম ধান পেয়েছি। ধান ছাড়াও মারফা, মিষ্টিকুমড়া, তিলসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদনও কমেছে। 

তবে জুমে উৎপাদন বাড়াতে সনাতনী জুমের পরিবর্তে আধুনিক পদ্ধতিতে জুম চাষ করার ওপর জোর দিয়েছে কৃষি বিজ্ঞানীরা। জুমের ফলন বাড়াতে গবেষণা করছে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ রোপণের পরার্মশ দিয়েছেন। 

পাহাড়ি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মো. আবদুল্লাহ আল মালেক জানান, জুমে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জুমে যদি আধুনিক যে বীজ রয়েছে বিশেষ করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে উদ্ভাবিত বিভিন্ন সবজির বীজ রয়েছে। এগুলো যদি রোপণ করে তাহলে জুমের উৎপাদন বাড়বে। সনাতন পদ্ধতির চাষাবাদ বাদ দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জুমের ফলন আরও বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এবার খাগড়াছড়িতে জুমের উৎপাদন কম হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। 

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে জুম চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ১৮০ মেট্রিক টন। এ বছর অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের ফলে জুমের ফসল উৎপাদন কমেছে। ফসল ঘরে তোলার সময় অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here