চলতি বছরে বিশ্বজুড়ে ঋণের বোঝা মোট জিডিপির ৯৪ দশমিক ৭ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছু দেশ এই বোঝা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পেরেছে। স্থানীয় সময় বুধবার (৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’-এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদেন অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে কম ঋণের দেশগুলোর বেশ কয়েকটির অবস্থান এশিয়ায়। এগুলো মূলত ছোট অর্থনীতির দেশ হলেও, এদের প্রবৃদ্ধি বেশ স্থিতিশীল এবং ঋণের বোঝা কমে এসেছে। অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রম লিখটেনস্টাইন। দেশটির ঋণের পরিমাণ জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
আইএমএফের সর্বশেষ বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে সর্বনিম্ন সরকারি ঋণ অনুপাতসহ দেশগুলির বিষয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবদেন দেখা যায়, ঋণের খাতায় একেবারে ‘শূন্য’ অবস্থানে রয়েছে মাকাও। বিশ্বের বৃহত্তম জুয়ার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চলের আয় মূলত আসে ক্যাসিনো ও গেমিং খাত থেকে। এই খাত থেকে আসা শতকোটি ডলার আয় এবং শক্তিশালী আর্থিক রিজার্ভের কারণে মাকাওয়ের কোনো ঋণের প্রয়োজন হয় না।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে লিখটেনস্টাইন। ইউরোপের একমাত্র দেশ হিসেবে সেরা দশে জায়গা পেয়েছে তারা। এটি মূলত একটি বৈশ্বিক আর্থিক কেন্দ্র। মজার বিষয় হলো, ২০২৫ সালের শুরুতে দেখা গেছে, দেশটির মোট জনসংখ্যার চেয়ে চাকরির বিজ্ঞপ্তির সংখ্যা বেশি।
এমনকি সেখানে বসবাসরত মানুষের চেয়ে নিবন্ধিত করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেশি। উল্লেখ্য, দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৪১ হাজার।
এদিকে, জিডিপির মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশ ঋণ নিয়ে তালিকার ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত। তেলসমৃদ্ধ দেশটির সরকারি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে জ্বালানি তেল থেকে। ২০২৪ সালে তারা তেল বিক্রি করে প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার আয় করেছে।
কুয়েতের মতো রাশিয়াও তেল রপ্তানির ওপর ভর করে ঋণের বোঝা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটির অর্থনীতি শক্ত অবস্থানে রয়েছে।
২০২৫ সালে রাশিয়ার ঋণের পরিমাণ জিডিপির ২৩ দশমিক ১ শতাংশ। কঠোর আর্থিক নীতি ও পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেও রাশিয়ার অর্থনীতি বেশ ভালোভাবেই সচল রয়েছে।

