‘মাছ পামু চিন্তাও করি নাই। ধার-দেনায় আই জর্জরিত হইয়া গেছি। এই মাছ বিক্রি কইরা যেই টাহা পাইছি, হেইয়া দিয়াই দেনা শোধ করমু। আবহাওয়া অনুকূলে আসার পর জাল ফেলে মোটামুটি ভালো মাছ পাইছি। সেই মাছ আলিপুর মৎস্য বন্দরে ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করছি। সামনে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে’ এমন কথা বলেছেন এফবি মারুফ ট্রলারের মাঝি বেল্লাল হোসেন।
গভীর সমুদ্রে বেশ কয়েক দিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা পেয়ে খুশি জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। কেউ ১০ মণ, কেউ ১২ মণ করে ইলিশ পাচ্ছে। তবে ছোট ট্রলার, ফাইবার বোট, ইঞ্জিন বোটের জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ। অতিরিক্ত দামে খুচরা বিক্রেতারা লোকসানের কবলে পড়ছেন। এছাড়া ইলিশের দাম শুনে ক্রয়ের আগ্রহ নেই মধ্যবিত্তদের।
জানা গেছে, জয়নাল মাঝি নামের এক জেলে প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাসনিয়া তিহা নামের এক ট্রলার নিয়ে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থেকে ১৭ জেলেসহ গভীর সাগরে মাছ শিকারে যান। তারা বিভিন্ন পয়েন্টে জাল ফেলেন। কিন্তু ইলিশের দেখা পাননি। পরে মৌডুবী ছয়বাম সংলগ্ন সাগরে জাল ফেলে অন্য মাছের সঙ্গে ধরা পড়ে দুই কেজি ওজনের দু’টি ইলিশ। এর মধ্যে একটির ওজন হয়েছে ২ কেজি ১০০ গ্রাম ও অপরটির ওজন হয়েছে ১ কেজি ৯০০ গ্রাম। গত বৃহস্পতিবার মহিপুর আড়তে অন্য ইলিশের সাথে ৬৫ হাজার টাকা মণ হিসেবে মাছ দুইটি নিলামে বিক্রি করা হয়। এ মৌসুমে জেলেদের জালে ধরা পড়া এ ইলিশ দুইটির ওজন সবচেয়ে বেশি বলে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, গত কয়েক দিন যাবৎ গভীর সমুদ্র থেকে মাছ শিকারিরা ট্রলার বোঝাই ইলিশ নিয়ে ফিরছেন। তবে কাঙিক্ষত ইলিশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপকূলবর্তী জেলেরা। এর প্রধান কারণ হলো আন্ধারমানিক ও রামনাবাদ চ্যানেল সংলগ্ন বেশ কয়েকটি ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে যে কারণে ইলিশ তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। উপকূলের জেলেদের জন্য পরামর্শ থাকবে তারা যেন গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের সরঞ্জামাদি তৈরি করে।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, জেলেদের জালে এখন প্রতিদিনই প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সামনের দিনগুলোতে আরও ইলিশ ধরা পরবে বলে আশা রাখি। এটা ৬৫ দিনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার সুফল।