জাবিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার রোধে বসুন্ধরা শুভসংঘের গণসচেতনতা কর্মসূচি

0

বসুন্ধরা শুভসংঘের সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘প্লাস্টিক ও পলিথিনমুক্ত সমাজ গড়ি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ স্লোগানে জাহাঙ্গীরনগর  বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) পলিথিনের ব্যবহার রোধে এক আলোচনা সভা ও পরবর্তীতে গণসচেতনতামূলক দেয়াল পোস্টারিং কর্মসূচি পালন করা হয়। টিএসসিসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এবং আবাসিক হলের দেয়ালে এসব পোস্টার সাঁটানো হয়।

আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী ও বসুন্ধরা শুভসংঘ জাবি শাখার সহসভাপতি আশুরা আজাদ বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিনের অতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো মাটিতে পাঁচশত থেকে হাজার বছর পর্যন্ত অক্ষত থাকতে পারে। প্লাস্টিকের এই দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি মাটির গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত করে। মাটির উর্বরতা কমে যায়। এছাড়া, প্লাস্টিক ও পলিথিন পোড়ালে পরিবেশে বিপজ্জনক গ্যাস নিঃসরণ হয়, যা বায়ুদূষণের কারণ। এ ধরনের গ্যাস মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির জন্য পলিথিন ও প্লাস্টিক অনেকাংশেই দায়ী। গত বছর এক অক্টোবর থেকে সুপারশপ গুলোতে পলিথিন ব্যবহার না করার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আমাদের উচিত সরকারকে সাহায্য করা। পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে নিত্যব্যবহার্য উপকরণগুলোর মধ্যে কাপড়ের ব্যাগ, ধাতব পানির বোতল, এবং কাঁচের জারের ব্যবহার পরিবেশের ওপর চাপ কমাতে সহায়ক। 
পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা এখন সমযের দাবি। সবাই উদ্যোগী হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ, নিরাপদ ও সবুজ পৃথিবী নিশ্চিত করতে আমরা সক্ষম হবো।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী ও বসুন্ধরা শুভসংঘ জাবি শাখার সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আসাদুজ্জামান বলেন, পলিথিন এমন একটি পণ্য যা পরিবেশের মারত্মক ক্ষতি সাধিত করছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি ৩৪ লাখ পলিথিন বিভিন্ন কারখানায় উৎপন্ন হচ্ছে। এ পলিথিনগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। পলিথিন একটি অপচনশীল দ্রব্য যা মাটির সাথে মিশতে ৫০০ থেকে ১ হাজার বছর সময় নেয়। যার ফলে পলিথিন বা প্লাস্টিক আমাদের খাদ্য শিকলেও প্রবেশ করছে। ফলাফলস্বরুপ আমাদের বিভিন্ন খাদ্যে মাইক্রো প্লাস্টিক এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, যা আমাদের ক্যান্সারসহ অন্যান্য স্বাস্থঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। শহরে জলাবদ্ধতার ও অন্যতম কারণ এই পলিথিনের অবাধ ব্যবহার। তাই পলিথিনের অবাধ ব্যবহার কমাতে হবে। রাস্ট্রীয় আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা লাগবে। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট জাতীয় পণ্য, কাপড়ের ব্যাগ, কাচ, লোহাসহ যেকল দ্রব্য পুনর্ব্যবহার যোগ্য সেগুলো আমাদের ব্যবহার করতে হবে। সর্বোপরি সকলের মধ্যে পলিথিন ব্যবহার বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

এ সময় অনান্যদের মধ্যে  উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহদী ইসলাম, বসুন্ধরা শুভ সংঘ জাবি শাখার কার্যনির্বাহি কমিটির  সদস্য, প্রত্যাশা রাণী, মহসিন আলী, রাব্বি হোসাইন জীবন, আসমাউল হোসনা, তানিয়া আক্তার ইকরা, মাহফুজা আক্তার, তিথী দাস, ইমরান শুভ, মোহাম্মদ জুবায়ের হোসেন, মোহাম্মদ রাকিব প্রামাণিক, মো. আল আমিন ভুঁইয়া, সোহান ইসলাম, মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও মোহাম্মদ আমানউল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here