ভূমিকম্পপ্রবণ জাপানে মেগা ভূমিকম্পের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি কয়েক দফায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা কেঁপে উঠেছে। এর ফলে উপকূলীয় শহরগুলোতে জরুরি প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশজুড়ে আগাম নিরাপত্তা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
গত সোমবার উত্তর জাপানের উপকূলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর পর দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে জানায়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জাপানে ৮ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। ওই সতর্কতার চার দিনের মাথায় আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে উত্তর-পূর্ব জাপান।
প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’ নামে পরিচিত সক্রিয় ভূমিকম্প বলয়ের ওপর অবস্থিত জাপান। এ কারণে দেশটি বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। যদিও জাপানে ভূমিকম্প একটি সাধারণ প্রাকৃতিক ঘটনা, তবে সাম্প্রতিক ধারাবাহিক শক্তিশালী কম্পনের পর সরকার বিশেষভাবে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এই প্রথমবারের মতো দেশটিতে ‘মেগা ভূমিকম্প’ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ধারাবাহিকতা উত্তর জাপানের লাখো মানুষের জীবন ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যদিও জাপানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি, তবে ভূমিকম্পের ঝুঁকির কারণে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে জাপান ভ্রমণের আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, অতীতেও জাপানে ভয়াবহ মেগা ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে ২০১১ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামিতে দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, জাপানে বছরে গড়ে প্রায় দেড় হাজার ভূমিকম্প ঘটে, অর্থাৎ দিনে গড়ে প্রায় তিনটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
যদিও বিজ্ঞানীরা এখনো ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট সময়, স্থান বা মাত্রা আগাম নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করতে পারেন না, তবে জাপানের ভূমিকম্প সতর্কতা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম উন্নত বলে স্বীকৃত।
তথ্যসূত্র: এনএইচকে ওয়ার্ল্ড।

