অবিলম্বে গাজায় ‘মানবিক যুদ্ধ বিরতি’র উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি রেজ্যুলেশন পাস হয়েছে। ইসরায়েলের ভারী বোমা বর্ষণে ক্ষত-বিক্ষত ফিলিস্তিনি ছিটমহলে আটকা পড়া নাগরিকদের জন্যে খাদ্য-ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করতে যুদ্ধবিরতি বিশেষ প্রয়োজন বলে রেজ্যুলেশনে উল্লেখ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ ১৪টি দেশ এটির বিরুদ্ধে থাকলেও ১২০টি দেশ রেজ্যুলেশনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ভোট দানে বিরত ছিল ৪৫ দেশ। রেজ্যুলেশনটি কার্যকর করতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও এর একটি রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। এতে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন-উভয় অংশের বেসামরিক নাগরিকের ওপর দমন-পীড়ন, সহিংসতার সমস্ত কর্মকাণ্ডের সমালোচনা ও নিন্দা করা হয়েছে।
রেজ্যুলেশনটি পাসের পরই জাতিসংঘে ইসরায়েলের স্থায়ী প্রতিনিধি গিলাদ এরদান জাতিসংঘের সমালোচনা করে বলেছেন, এমন একটি রেজ্যুলেশন পাস হলো, যার মধ্যে বিন্দুমাত্র ন্যায্যতা নেই। শুক্রবার দিনটি কুখ্যাত হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
রাষ্ট্রদূত গিলাদ আরও উল্লেখ করেছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাটির এমন মনোভাবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার আর কোনো অধিকার থাকলো না।
রেজ্যুলেশনটি উত্থাপনের কিছুক্ষণ আগে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি ত্রাণ সংস্থার প্রধান কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ্পে লাজারিনি একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করেছিলেন যে, গাজা এখন ভয়ংকর স্বাস্থ্যঝুঁকির দ্বারপ্রান্তে। কারণ রাস্তাসমূহ ময়লা-আবর্জনায় উপচে পড়ছে। পয়ঃপ্রণালী নিষ্কাশনের ন্যূনতম সুযোগ নেই গাজায়। বোমা বর্ষণের পাশাপাশি যেখানেই মানুষের চিহ্ন রয়েছে, সেখানেই হামলার ঘটনা ঘটছে।
ফিলিপ্পে লাজারিনি আরও উল্লেখ করেন, আমরা এখানে কথা বলছি, ওদিকে গাজায় বেসামরিক লোকজন মারা যাচ্ছে। তারা শুধু বোমা এবং হামলায় মারা যাচ্ছে। শিগগিরই যদি গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা না হয়, তাহলে বহু মানুষের প্রাণ ঝরবে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রসহ ৩৫ সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থনে কানাডা আরেকটি রেজ্যুলেশন উত্থাপন করেছিল। কিন্তু সেটি দুই তৃতীয়াংশ ভোটের অভাবে পাস হয়নি। সেখানে গাজা পরিস্থিতির জন্যে একতরফাভাবে হামাসকে দায়ী করা হয়েছিল। অপরদিকে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধ বিরতির রেজ্যুলেশনটি ৪৫ সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থনে উত্থাপন করেছিল জর্দান।