প্রবল অতিঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নিরাপদে নেয়া হয়েছে ৩২ হাজার পরিবার। দুর্যোগের আগে ও পরে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল সংস্থার সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। মোখার প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় প্রায় ৪শ’ ছোট জাহাজ আশ্রয় নিয়েছে কর্ণফুলী নদীতে। জলোচ্ছ্বাস থেকে গুদাম ও দোকান রক্ষা করতে দেশের অন্যতম পাইকার বাজার খাতুনগঞ্জে দেওয়া হচ্ছে দেয়াল।
দুযোর্গ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘দুর্যোগ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকা থেকে ৩২ হাজার পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে। সকল সংস্থার সাথে সমন্বয় করে কাজ চলছে।’
কর্ণফুলী নদীতে ৪০০ লাইটার জাহাজ :
মোখার প্রভাবে সাগর উত্তাল হওয়ার কর্ণফুলী নদীতে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৪শ ছোট জাহাজ। কর্ণফুলীর সদরঘাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত এলাকায় লাইটার জাহাজ, অয়েল ট্যাংকার, ফিশিং ট্রলার, ড্রেজার ও ভার্ব নোঙর করেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক। এসব জাহাজের মধ্যে বেশিরভাগ জাহাজে রয়েছে ভোগ্যপণ্য, মিশেনারী ও খাদ্য শস্য। কিছু রয়েছে খালি জাহাজ। লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহসভাপতি নবী আলম বলেন, পতেঙ্গা উপকূল ও বর্হিনোঙরে কোন জাহাজ নেই। সব জাহাজ বন্দরের উজানে আশ্রয় নিয়েছে। তবে শঙ্কার মধ্যে আছেন জাহাজ শ্রমিকরা।
৩২ হাজার পরিবার নেয়া হয় নিরাপদ আশ্রয়ে :
ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় ৬ উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত প্রায় ৩২ হাজার পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তার মধ্যে বাঁশখালী উপজেলার ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৫ হাজার ১১৩ জন, আনোয়ারার ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫ হাজার ২৮০ জন, কর্ণফুলীর ১৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২শ জন, সন্দ্বীপের ১৬২ আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৮৮৫ জন, সীতাকুÐের ৩২ টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ২৮৯ জন ও মীরসরাইয়ে ৬০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরানো হল ১০০ পরিবার
নগরের মতিঝর্ণা-বাটালি হিল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ১০০টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। রবিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম, বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জামিউল হিকমাহ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্তের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে তাদের সরানো হয়। অভিযানকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারী আরও ৫০-৬০টি ঘর চিহ্নিত করা হয়েছে। এসকল ঘর ফাঁকা করতে কাউন্সিলরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও ডেপুটি কালেক্টর মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মতিঝর্ণা-বাটালি হিল এলাকা থেকে প্রায় ১০০টি পরিবারকে অপসারণ করা হয়েছে।