জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব বিশ্বের হ্রদ ও জলাধারে!

0

বিগত বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে খরা, বন্যা, দাবদাহের সৃষ্টি হচ্ছে। কমছে মাটির উর্বরতা। হ্রাস পাচ্ছে উৎপাদন। এর প্রভাবে পাল্টে যাচ্ছে বৃষ্টির ধরন, যা পরিবেশের উপর ফেলছে নানা বিরূপ প্রভাব।

এবার প্রকাশ্যে এল আরও একটি ভয়াবহ তথ্য। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিগত তিন দশকে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি বৃহত্তম হ্রদ ও জলাধারের পানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। 

বৃহস্পতিবার সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দলের এই সমীক্ষা প্রকাশ হয়। সেখানে বলা হয়, শুকনো হ্রদের অববাহিকায় বাস করে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ।

হ্রদগুলো রয়েছে পৃথিবীর ৩ শতাংশ এলাকাজুড়ে ও ভূপৃষ্ঠের উপরিতলের প্রায় ৯০ শতাংশ স্বাদু পানি ধারণ করে, যা পানীয় জল, সেচ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে অপরিহার্য উৎস। নানা প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এই সব জলাধারের ওপর নির্ভরশীল।

সাধারণত বৃষ্টি ও তুষারপাতের মতো প্রাকৃতিক ঘটনায় হ্রদের পানির স্তর ওঠানামা করে। কিন্তু মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে।

এ ঘটনার শিকার হচ্ছে অতিপরিচিত হ্রদগুলো। দক্ষিণ-পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীর লেক মিডস মহাখরা ও কয়েক দশকের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে নাটকীয়ভাবে শুকিয়ে গেছে। এছাড়া এশিয়া ও ইউরোপে প্রবাহিত বিশ্বের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ পানির উৎস কাস্পিয়ান সাগর জলবায়ু পরিবর্তন ও অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সংকুচিত হচ্ছে।

এ গবেষণায় বৃহত্তম হ্রদ ও জলাধারগুলোর প্রায় দুই হাজারটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিরীক্ষণ করা হয়েছে। এগুলো পৃথিবীর মোট হ্রদের পানির ৯৫ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। ১৯৯২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত সময়ে আড়াই লাখের বেশি উপগ্রহ চিত্র পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। যার মাধ্যমে কয়েক দশকের হ্রদের ইতিহাস তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন।

ফলাফলে দেখা যায়, ৫৩ শতাংশ হ্রদ ও জলাধার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি হারিয়েছে। বছরে প্রায় দুই হাজার ২০০ টন, যা ১৭টি লেক মিডসের পানির সমান।

প্রাকৃতিক হ্রদের পানির পরিমাণের অর্ধেকেরও বেশি ক্ষতির জন্য মানব সৃষ্ট ক্রিয়াকলাপ ও জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী। এ তথ্য দিচ্ছে প্রতিবেদনটি। এছাড়া স্রোতের পরিবর্তন, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বাষ্পীভবন, পলি জমাট ও জলাবদ্ধতার কারণে হ্রদগুলো সংকুচিত হয়েছে। সূত্র: সিএনএন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here