জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা: ২০২৪-এর তাপমাত্রা বিশ্ববাসীকে স্তম্ভিত করেছে

0

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব এবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার জলবায়ু বিজ্ঞানীরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু গবেষণা সংস্থা কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সিথ্রিএস) এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, আধুনিক যুগের মানুষ এমন বিপজ্জনক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্মুখীন আগে কখনো হয়নি। সংস্থার পরিচালক কার্লো বুওনটেম্পো বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তন যে গতিতে এগোচ্ছে, তা অবিশ্বাস্য। ২০২৪ সালের প্রতিটি মাসই প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় সবচেয়ে উষ্ণ বা দ্বিতীয় উষ্ণ মাস হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।

সিথ্রিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের তুলনায় ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। ২০২৩ সালের তুলনায় এটি ০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

মানুষের অতি মাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো ও বনজঙ্গল ধ্বংসের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, চীন, ও ভারতের মতো দেশগুলো এ ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে।

গ্লোবাল কার্বন বাজেট রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কার্বন নিঃসরণ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ইউরোপের ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমলেও, চীনে নিঃসরণ বেড়েছে দশমিক ২ শতাংশ এবং ভারতে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।  

২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির নিচে রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, গত এক দশকে প্রায় প্রতি বছর কার্বন নিঃসরণ বেড়েছে।  

যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের তাপমাত্রা মানব ইতিহাসের উষ্ণতম বছরগুলোর মধ্যে শীর্ষে। মার্কিন বিজ্ঞানীরা শিগগিরই এই বছর নিয়ে তাদের জলবায়ু প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন।  

জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ব্যয়বহুল পরিবেশ বিপর্যয় এড়াতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ এক পৃথিবীর মুখোমুখি হতে হবে,” বলেন কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের গবেষকরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here