বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় শেখ মনিরুজ্জামান (৪২) নামে এক দিনমজুরকে চোর সন্দেহে বেঁধে রেখে নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের ঘোষগাতি বাজারে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলার ঘোষগাতি গ্রামের হেকমত শেখের ছেলে শেখ আরিফুল ইসলাম (২৩), আব্দুল হালিম শেখের ছেলে আব্দুল গনি শেখ (৩৫), আহম্মদ শেখের ছেলে আসলাম শেখ (২৭), নগরকান্দি গ্রামের লায়েক শেখের ছেলে আকামে শেখ (২৭) ও খুলনার রূপসা উপজেলার তালিমপুর গ্রামের সিদ্দিক শেখের ছেলে মাহমুদ শেখ (২৮)।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম জানান, গত শনিবার সকালে মোল্লাহাট উপজেলার মাতারচর এলাকার জাহিদুল ইসলাম তার অসুস্থ ছাগল নিয়ে চিকিৎসার জন্য দিনমজুর মনিরুজ্জামানকে সাথে নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যান। সেখানে অসুস্থ ছাগলকে চিকিৎসা করিয়ে দুপুরে ভ্যানযোগে বাড়ি ফেরার পথে ঘোষগাতী বাজারে কয়েকজন তাদের চোর সন্দেহে গতিরোধ করে কোনো কিছু না শুনেই ছাগলের মালিক জাহিদুলকে পেটাতে থাকে। এসময়ে জাহিদ দৌড়ে পালিয়ে গেলে লোকজন দিনমজুর শেখ মনিরুজ্জামানকে ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে অমানসিক নির্যাতন চালায়।
পরে আহত মনিরুজ্জামানকে ছেড়ে দেয়া হলে প্রথমে মোল্লাহাট উপজেলা হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গোপালগঞ্জ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। মোল্লাহাটের পূর্ব দারিয়ালা গ্রামের ইসলাম শেখের ছেলে গাংনী মাতারচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী ভূমিহীন দিনমজুর মনিরুজ্জামানকে চোর সন্দেহে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের দুটি ভিডিও রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনাটি পুলিশের নজরে এলে জড়িতদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর শুরু করে। এই অবস্থায় ছাগল মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার মোল্লাহাট থানায় মনিরুজ্জামানকে নির্যাতনকারী আটজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত শেখ আরিফুল ইসলামসহ এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।