ভারতের হরিয়ানার ফরিদাবাদে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরের বিরুদ্ধে বাবাকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, টাকা চুরির সন্দেহে বকা-ঝকা করায় রাগের মাথায় সে এই ভয়ংকর কাণ্ড ঘটিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে ফরিদাবাদের নবীননগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ অভিযুক্ত কিশোরকে শনাক্ত করে আটক করে।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে চিৎকার শুনে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন ভবনের মালিক। প্রথম তলা থেকে শব্দ আসছে বুঝতে পেরে তিনি দ্রুত ছুটে যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। প্রতিবেশীরা উদ্ধার কাজে এগিয়ে এলে দেখা যায়, কিশোরটি সিঁড়ির প্রবেশপথও বন্ধ করে রেখেছে।
ভবনের মালিক রিয়াজউদ্দিন পুলিশের কাছে জানান, “রাত ২টার দিকে আমি চিৎকার শুনে জেগে উঠি। আমি ছাদে ওঠার চেষ্টা করি, যেখানে মোহাম্মদ আলীম ও তাঁর ছেলে ভাড়া থাকতেন। গিয়ে দেখি, দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। এক প্রতিবেশীর সহায়তায় ছাদে গিয়ে দেখি ঘরটি আগুনে পুড়ছে, দরজা আটকানো, আর আলীম ভেতরে আটকা পড়েছেন।”
আলীম আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান, আর তাঁর ছেলে পাশের বাড়ির ছাদে লাফিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানান রিয়াজউদ্দিন।
পুলিশ জানায়, ৫৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ আলীম তাঁর ছেলেকে টাকা চুরির অভিযোগে বকা-ঝকা করেছিলেন। ধারণা করা হয়, রাগের মাথায় কিশোরটি দাহ্য পদার্থ ঢেলে বাবাকে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর জেলার বাসিন্দা আলীম গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ছেলেকে নিয়ে ফরিদাবাদে আসেন এবং অজয়নগর (পার্ট-২) এলাকায় রিয়াজউদ্দিনের ছাদের ওপর একটি কক্ষ ভাড়া নেন। তিনি ধর্মীয় স্থানগুলোর জন্য অনুদান সংগ্রহ করতেন এবং বাজারে মশারি ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করতেন।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড তাৎক্ষণিক রাগের বহিঃপ্রকাশ নাকি পূর্বপরিকল্পিত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আলীম ছেলেকে একাধিকবার তার আচরণ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। এটি দীর্ঘদিনের ক্ষোভের ফল নাকি হঠাৎ রাগের বিস্ফোরণ, আমরা তা খতিয়ে দেখছি।”
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া