চীনে পাঁচ দিনের উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফিরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু বলেছেন, মালদ্বীপ ছোট হতে পারে। কিন্তু আমাদের ধমক দেওয়ার লাইসেন্স কাউকে দেওয়া হয়নি। কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে চীনপন্থী হিসেবে পরিচিত মুইজ্জু বলেন, ‘আমরা ছোট হতে পারি। কিন্তু এটা কখনই তাদেরকে আমাদের ধমক দেওয়ার লাইসেন্স দেয় না।’
গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হন তিনি। নির্বাচনের প্রচারণায় মালদ্বীপে বিদ্যমান থাকা ‘ভারত প্রথম’ নীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন তিনি। একইসঙ্গে মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনাদের বহিষ্কারেরও ঘোষণা দেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমে চীন সফরে যান তিনি।
তিনি বলেন, এই মহাসাগরটি একটি নির্দিষ্ট দেশের নয়। এই (ভারত) মহাসাগরটিও এখানে অবস্থিত সমস্ত দেশের অন্তর্ভুক্ত। আমরা কারও বাড়ির উঠানে নই। আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।
গত সপ্তাহে পাঁচদিনের চীন সফরে গিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে অন্তত ২০টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন মুইজ্জু। চীনের শীর্ষ নেতাদের সাথে বৈঠকের দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয়পক্ষ তাদের নিজ নিজ প্রধান স্বার্থ রক্ষায় পরস্পরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন অব্যাহত রাখার বিষয়ে রাজি হয়েছে।
চীনের বিবৃতিতে বলা হয়, মালদ্বীপের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং জাতীয় মর্যাদা সমুন্নত রাখার ওপর চীনের দৃঢ় সমর্থন রয়েছে। মালদ্বীপের জাতীয় পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়ন পথ অন্বেষণে চীনের শ্রদ্ধা এবং সমর্থন রয়েছে। একই সঙ্গে মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বহিরাগত হস্তক্ষেপের দৃঢ় বিরোধিতা করে বেইজিং।
রাজধানী মালেতে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে মুইজ্জু বলেছেন, মালদ্বীপকে ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে চীন। তিনি বলেন, এই অর্থের সিংহভাগই মালের রাস্তা পুনর্নির্মাণে ব্যয় করা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে মালদ্বীপের মন্ত্রীদের অবমাননাকর মন্তব্যের পর উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ব্যাপক টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এর মাঝেই চীন সফরে গিয়ে মালদ্বীপে আরও বেশি বিনিয়োগ ও চীনা পর্যটক পাঠাতে বেইজিংয়ের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান মুইজ্জু।