চীনের পাল্টা ব্যবস্থা, কমতে পারে মার্কিন তেল রফতানি

0

চলতি বছর বিশ্বব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল রফতানি কমে যেতে পারে। চীনের পাল্টা শুল্কের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই শঙ্কার যে, কোভিড-১৯ মহামারীর পরও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি মার্কিনিদের।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র চার দশকের তেল রফতানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর দেশটির রফদানি ১০ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পায়। ফলে দেশটি সৌদি আরব ও রাশিয়ার পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল রফতানিকারক হিসেবে স্থান করে নেয়। ওপেক ও তার মিত্র দেশগুলোর উৎপাদন কমার বৈশ্বিক প্রভাবও এতে কিছুটা কমে আসে।

কেপলার-এর জাহাজ ট্র্যাকিং তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে চীন প্রতিদিন ১ লাখ ৬৬ হাজার ব্যারেল মার্কিন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট তেল রফতানির প্রায় পাঁচ শতাংশ। তবে রাশিয়া ও ইরানের ছাড়মূল্যের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন তেলের প্রতি চীনের নির্ভরতা কমে এসেছে।

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তেল রফতানির প্রবৃদ্ধি মাত্র ০.৬ শতাংশ বেড়ে দৈনিক গড়ে ৩৮ লাখ ব্যারেলে পৌঁছায়। কেপলার-এর বিশ্লেষক ম্যাট স্মিথ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের তেলের চাহিদা স্থিতিশীল হয়ে গেছে এবং চীনের পাল্টা শুল্ক এটিকে আরও প্রভাবিত করতে পারে।

চীনে রফতানি করা মার্কিন অপরিশোধিত তেলের ৪৮ শতাংশ ছিল ‘মিডিয়াম-সাওয়ার’ গ্রেড, যা মধ্য ঘনত্বের ও অধিক সালফারযুক্ত। এ ধরনের তেল যুক্তরাষ্ট্রের পরিশোধনাগারগুলো সহজেই ব্যবহার করতে পারে এবং অভ্যন্তরীণ বাজারেও এর চাহিদা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ করে, তাহলে এই তেল দেশেই রাখা হতে পারে।

কেপলার-এর তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে রফতানি করা তেলের প্রায় অর্ধেক লুইজিয়ানা অফশোর ওয়েল পোর্ট থেকে পাঠানো হয়। এছাড়া, টেক্সাসের করপাস ক্রিস্টির কাছে এনব্রিজের ইংলেসাইড টার্মিনাল থেকে ২৫ শতাংশ রফতানি করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অক্সিডেন্টাল পেট্রোলিয়াম চীনে অন্তত ১৩টি ‘লাইট-সুইট’ ডব্লিউটিআই মিডল্যান্ড তেলের চালান সরবরাহ করেছে বলে কেপলার-এর তথ্য থেকে জানা যায়।

তবে চীনের জন্য এই শুল্কের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চীনা কাস্টমসের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশটির মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, যা ২০২৩ সালের ২ দশমিক ৫ শতাংশের তুলনায় কম।

২০২৪ সালে চীন কানাডা থেকে তেল আমদানির পরিমাণ ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেলের বেশি করেছে, যা ট্রান্স মাউন্টেন পাইপলাইনের সম্প্রসারণের কারণে সম্ভব হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here