চাঁদা না দেওয়ায় ২ভাইকে হত্যা, পুলিশ বলছে চোর সন্দেহে গনধোলাই

0

নরসিংদীর পলাশে চাঁদা না দেওয়ায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তাদের বাঁচাতে গেলে মা-বাবাকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর সাকিব (২০) নামে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। অপর ভাই রাকিব ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায়।

সোমবার রাত ৯টার দিকে পলাশ উপজেলার কর্তাতৈল এলাকায় এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে। তবে পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনির হোসেন জানান, চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন সাকিব মিয়া (২০) ও তার সহোদর ভাই রাকিব (২৪)। তারা পলাশের কর্তাতৈল গ্রামের আশরাফ উদ্দিনের ছেলে। আহতদের মধ্যে আছেন তাদের পিতা আশরাফ উদ্দিন ও মা রাবেয়া খাতুন।

নিহতদের স্বজনদের দাবি, রাকিব ও তার বাবা আশরাফ উদ্দিন বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করতেন। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাদের কাছে চাঁদা দাবি করছিল। কিন্তু তারা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

আজ সোমবার ঈদের দিনে সাকিব ও তার বন্ধুরা ঘুরতে বের হলে কর্তাতৈল এলাকায় দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা চালায়। সাকিবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে। সংবাদ পেয়ে তার ভাই রাকিব, মা ও বাবা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও কুপিয়ে আহত করা হয়।

স্থানীয়রা চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত রাকিব ও তার মা-বাবাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে ঢাকায় নেওয়ার পথেই রাকিবের মৃত্যু হয়।

নিহতের চাচি হাজেরা বেগম বলেন, ‘এলাকার কিছু দুর্বৃত্ত দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করছিল। চাঁদা না দেওয়ায় ঈদের দিন ঘুরতে গেলে সন্ত্রাসীরা সাকিব ও রাকিবকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।’

তবে পুলিশের ভাষ্য ভিন্ন। পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনির হোসেন বলেন, ‘চোর সন্দেহে পলাশের বাঘদি গ্রামের লোকজন সকালে একজনকে গণপিটুনি দিয়েছে। পরে রাতে আরও কয়েকজনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়, যেখানে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঢাকায় নেওয়ার পর কেউ মারা গেছে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নই।’

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের বক্তব্য ও স্বজনদের অভিযোগের মধ্যে পার্থক্য থাকায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি উঠেছে। স্থানীয়রা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here