চর বিজয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ

0
চর বিজয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে জেগে ওঠা নান্দনিক দ্বীপ ‘চর বিজয়’। চারদিকে অথৈ নীল জলরাশি। এরই মধ্যে এ দ্বীপটিতে দৃশ্যমান হয়েছে ম্যানগ্রোভসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এ যেন প্রকৃতির নতুন রূপ। বিস্তৃত বালুময় চর বিজয়ে বিস্তার ঘটেছে সৌন্দর্যের। 

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দ্বীপটিতে সুফল প্রকল্পের আওতায় সৃজন বাগান করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ সময় রোপণ করেন ঝাউ, ধানশী, সুন্দরী, ছইলা কেওড়াসহ বিভিন্ন ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছের চারা। এছাড়াও স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশকিছু গাছের চারা রোপন করেছে এ দ্বীপে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে বালু ওয়াশ আউট হয়ে ওইসব চারা গাছ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এ দ্বীপটিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাগান পুনরুদ্ধারে ফের ঝাউ গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ। প্রথম ধাপে ৮ হাজার ঝাউ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ইয়াসিন সাদেক।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে এ দ্বীপটির সন্ধান মিলে। তখন এ দ্বীপটির নাম ‘চরবিজয়’ রাখা হলেও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা জেলেদের কাছে ‘হাইরের চর’ নামে পরিচিত। প্রতিদিনই আগত পর্যটকরা ছুটে যাচ্ছে এক নজর দেখতে। তবে বর্ষায় এ দ্বীপটি পানির নিচে থাকলেও শীত ও গ্রীষ্মকালে এটি পুরোপুরি দৃশ্যমান। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এ দ্বীপটি সৌন্দর্য্য এখন পর্যটকদের নতুন গন্তব্য। এ যেন সত্যিই এক নিঃশব্দ, নিরিবিলি, নির্মল রূপকথার রাজ্য!

পর্যটকদের ভাষ্যমতে এ দ্বীপে লাল কাঁকড়া আর পাখির রাজত্ব। একই সঙ্গে নতুনভাবে সবুজে সেজেছে ম্যানগ্রোভ জাতীয় ছোট ছোট গাছের চারা আর ঘাস। স্বচ্ছ জলে সামুদ্রিক মাছের ছোটাছুটি। এসব দৃশ্য দেখে নিমেষেই সারাদিনের ক্লান্ত মনকে ভরিয়ে দেয় আন্যরকম আনন্দ। তবে এ দ্বীপটিতে নেই কোন দোকানপাট কিংবা বাড়িঘর। তাই কুয়াকাটা থেকেই খাবার পানিসহ প্রয়োজজনীয় জিনিসপত্র সংঙ্গে নিয়েই যেত হয়।
পর্যটনকর্মী আবুল হোসেন রাজু বলেন, কুয়াকাটা থেকে ট্রলার বা স্পিডবোটে মাত্র দেড় ঘণ্টার সাগর পথ পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাবেন চর বিজয়ে। এখানে না এলে কুয়াকাটা ভ্রমণ যেন অসম্পূর্ণই থেকে যায়! বালুতটে দেখা মেলে শতশত লাল কাঁকড়া দল আর সাদা বক, পানকৌঁড়ি, গাংচিল, চ্যাগা, বালিহাঁসসহ বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি। আর সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো একই স্থানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম মনিরুজ্জামান বলেন, বিস্তৃত দ্বীপটিতে রোপণকৃত গাছগুলো দৃশ্যমান হয়েছে। সুফল প্রকল্পের আওতায় বনায়নের কার্যক্রম চলছে। চর বিজয়ে বনায়ন তৈরি হলে অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে উঠবে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here