গ্রীস উপকূল থেকে ৫৪৫ অভিবাসী উদ্ধার

0
গ্রীস উপকূল থেকে ৫৪৫ অভিবাসী উদ্ধার

গ্রীসের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ গাভদোসের উপকূল থেকে ৫৪৫ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে দেশটির কোস্ট গার্ড। শুক্রবার লিবিয়া থেকে আসা একটি মাছ ধরার নৌকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোর মধ্যে এটি গ্রীসের অন্যতম বড় উদ্ধার অভিযান বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

হেলেনিক কোস্ট গার্ড জানায়, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত তিনটার কিছু পর গাভদোস দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ১৬ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা নৌকা থেকে বিপৎসংকেত পাওয়া যায়। এরপর তিনটি কোস্ট গার্ড জাহাজ, তিনটি ফ্রন্টেক্স জাহাজ এবং তিনটি বাণিজ্যিক জাহাজ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়।

উদ্ধারকারীরা একটি মাছ ধরার নৌকায় গাদাগাদি করে থাকা শত শত অভিবাসীকে শনাক্ত করেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা অভিযানের পর নিরাপদে সবাইকে ক্রিট দ্বীপের আগিয়া গালিনি বন্দরে নেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্ধার হওয়া সবাই শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছেন।

আগিওস ভাসিলিওস পৌরসভার মেয়র জানায়, অভিবাসীরা অল্প সময়ের জন্য আগিয়া গালিনিতে অবস্থান করবেন, এরপর তাদের রেথিমনো শহরে স্থানান্তর করা হবে। পৌর কর্তৃপক্ষ খাবারের ব্যবস্থা করেছে।

একই দিনে আরেকটি পৃথক ঘটনায়, গাভদোসের কাছে একটি নৌকা থেকে আরও ৩২ জন অভিবাসীকে শনাক্ত করে ফ্রন্টেক্স। তাদের ক্রিটের হানিয়া শহরে নেওয়া হয়েছে। এই দলটির সবাইও সুস্থ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

কম জনবসতিপূর্ণ গাভদোস দ্বীপটি সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসনপ্রবাহের একটি নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। দ্বীপটিতে স্থায়ী বাসিন্দা শতাধিকেরও কম হলেও প্রায় প্রতিদিনই উদ্ধার অভিযান চালাতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর তোব্রুক থেকে পরিচালিত মানবপাচার চক্রগুলো ভূমধ্যসাগরের নজরদারির ফাঁকফোকর হিসেবে গাভদোস রুটকে বেছে নিয়েছে।

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই ক্রিট ও গাভদোসে পৌঁছেছেন ৭ হাজার ৩০০ র বেশি অভিবাসী, যা পুরো ২০২৪ সালের মোট সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। অধিকাংশ অভিবাসীই লিবিয়ার পূর্ব উপকূল থেকে যাত্রা শুরু করেন এবং তাদের সমুদ্রপথে যাত্রা সময় লাগে অন্তত ৩৬ ঘণ্টা।

অভিবাসীরা সাধারণত মিসর, সুদান ও অন্যান্য দেশ থেকে আসেন। পাচারকারীদের হাতে জনপ্রতি ২ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত দিতে হয়। এসব নৌকা সাধারণত অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই এবং সমুদ্রযাত্রার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

গাভদোসে বড় সংখ্যক অভিবাসী রাখার মতো কোনো স্থায়ী অবকাঠামো বা গ্রহণকেন্দ্র নেই। ফলে উদ্ধার হওয়ার পর সবাইকে অস্থায়ীভাবে ক্রিট দ্বীপে স্থানান্তর করতে হচ্ছে, যেখানে স্থানীয় প্রশাসন সীমিত অবকাঠামোগত চাপের মুখে রয়েছে।

অভিবাসনপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের জুলাইয়ে গ্রীস উত্তর আফ্রিকা থেকে আগতদের জন্য তিন মাসের জন্য আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত করে। একই সঙ্গে লিবিয়ার জলসীমার কাছে নৌ-ফ্রিগেট মোতায়েন এবং ফ্রন্টেক্সের সঙ্গে যৌথ টহল জোরদার করা হয়েছে।

সূত্র: ইউরো নিউজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here