গ্রিসের অন্যতম পর্যটন নগরী সান্তোরিনি ও আমোরগোস দ্বীপে টানা চারদিন ধরে দফায় দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় মানুষ বাইরে ঘুমাতে বাধ্য হয়েছে। গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে সান্তোরিনি দ্বীপ এবং এজিয়ান সাগরের আশপাশের মানুষ শত শত ছোট-বড় ভূমিকম্পের ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের (ইএমএসসি) রেকর্ড অনুসারে, আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত কয়েক মিনিটের ব্যবধানে অব্যাহতভাবে ভূমিকম্প আঘাত হানে। গতকাল সোমবার বিকেলে ৫.১ মাত্রার সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্পটি রেকর্ড করা হয়েছে।
ব্রাসেলস থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিতসোটাকিস বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে ভূমিকম্পের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে এবং আমাদের দ্বীপবাসীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
হাজার হাজার স্থানীয় এবং ছুটি কাটাতে আসা মানুষ সান্তোরিনি ও পার্শ্ববর্তী আনাফি, আইওস এবং আমোরগোস দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে যাওয়ার জন্য ফেরিঘাটে ও বিমানবন্দরে ভিড় করেছে।
তাদের আশঙ্কা, ছোট ছোট ভূমিকম্প একটি বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত দিতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। মনোরম অর্ধচন্দ্রাকার সান্তোরিনি দ্বীপটি একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির আবাসস্থল।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩ বা তার বেশি মাত্রার আনুমানিক ২০০টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে।
তারা জোর দিয়ে জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের সঙ্গে এই ভূমিকম্পগুলো সম্পর্কিত নয়।
বিশিষ্ট গ্রিক ভূকম্পবিদ গেরাসিমোস পাপাডোপোলোস সতর্ক করে বলেছেন, বর্তমান ছোট ছোট এই ভূমিকম্প একটি বৃহত্তর ভূমিকম্প ঘটাতে পারে। তিনি আরো বলেন, ‘কম্পনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কেন্দ্রস্থলগুলো উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গেছে। যদিও এগুলো আগ্নেয়গিরির কারণে নয়। এটা টেকটোনিক ভূমিকম্প এবং ঝুঁকির মাত্রা বেড়েছে।’
সান্তোরিনিতে প্রতি বছর ৩০ লাখেরও বেশি দর্শনার্থী আসেন। যা ১৬২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে বিশাল আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। সান্তোরিনিতে এখনো একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। সর্বশেষ অগ্ন্যুৎপাতটি ঘটেছিল ১৯৫০ সালে।