গ্রিসসহ ইউরোপের বিভিন্ন থেকে প্রায় ৬০ জন অনিয়মিত বাংলাদেশিকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৫ মার্চ) এসব অভিবাসী নিয়ে একটি বিশেষ বিমান ঢাকায় অবতরণ করে। বাংলাদেশ দূতাবাস গ্রিস জানিয়েছে, এসব ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনকে গ্রিস থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকিরা অন্য দেশে ছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনফোমাইগ্রেন্টস। প্রতিবেদনে বলা হয়- গ্রিস, স্পেন, মাল্টা, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে থাকা অন্তত ৬০ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি অভিবাসী নিয়ে একটি চার্টার বিমানে বুধবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করে।
তাজুল ইসলাম আরো বলেন, ট্রানজিট অবস্থায় সাইপ্রাসে ইটালি, চেক প্রজাতন্ত, মাল্টা, স্পেন, সুইডেন, রোমানিয়াসহ অন্যান্য ইইউ দেশে থেকে আসা বাংলাদেশিরা আমাদের সাথে যোগ দেয়। আমরা মোট ৬৩ জন ছিলাম ফ্লাইটে। একজন অভিবাসীর সাথে দুইজন পুলিশ চার্টার ফ্লাইটে উপস্থিত ছিল। তাদের সক্রিয় উপস্থিতিতে আমাদেরকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতির কারণে আমরা একে অপরের সাথে ভালো করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ছয় বছর ধরে গ্রিসে ছিলেন বাংলাদেশি অভিবাসী মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। তিনি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, গাড়িতে তোলার পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাদের সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়া হলে আমাদের উকিল আর আমাদের অবস্থান সনাক্ত করতে পারেনি। ঢাকায় আসার পর আমাদের সবার ফোন ফেরত দেয়া হয়।
অপরদিকে, বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্স ২০ জনের সংখ্যা জানালেও অভিবাসীরা দাবি করেছেন মোট ২৬ জন বাংলাদেশিকে গ্রিস থেকে ‘ডিপোর্ট’ করা হয়েছে। এসব অভিবাসীদের মধ্যে ৪ জন ইতিমধ্যে বাংলাদেশ-গ্রিস বৈধতা চুক্তির আওতায় বৈধতার জন্য আবেদন প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে ছিলেন।
‘ডিপোর্ট’ হওয়া তাজুল ইসলাম বলেন, আমি মেনেদি ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় নতুন নিয়মিত বৈধতার জন্য আবেদন করেছিলাম। আমার আইনজীবী ক্যাম্প থেকে বের হওয়ার আইনি বিষয়গুলো দেখছিলেন। কিন্তু আমাদেরকে কোনও তথ্য না দিয়ে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমাদের আইনজীবী শত চেষ্টা করেও আমার অবস্থান সনাক্ত করতে পারেননি। কারণ গ্রিক কর্তৃপক্ষ কোনও তথ্য প্রদান করেনি।
মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, আমি গত বছরের জুলাই মাসে আটক হয়ে মেনেদি ক্যাম্পে বন্দী ছিলাম। সেখান থেকে উকিলের মাধ্যমে বৈধতার জন্য আবেদন করে অনলাইনে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পেয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেও আমাকে জোরপূর্বক ‘ডিপোর্ট’ করা হয়েছে।
ঢাকায় ফেরত যাওয়া ৩০ বছর বয়সি বাংলাদেশি মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, মেনেদি ক্যাম্প থেকে আমাদেরকে মোট ৩০ জনকে বিমানবন্দরে নেয়া হলেও বাকি চারজনকে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়। সম্ভবত তাদের আইনজীবীরা দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়েছিল।
তাজুল ইসলাম বলেন, বৈধতার আবেদন করা ব্যক্তিদের তালিকায় আপনারা আমার নাম যাচাই করতে পারেন। দূতাবাসের তালিকায় ৪৫৪৮ নং সিরিয়ালে আমার নাম রয়েছে। আমার আইনজীবী একটু আগে জানায় আমার বৈধতার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছিল। আমি আমার আইনজীবীর সহায়তায় আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।
এ ব্যাপারে দূতাবাসের মিনিষ্টার মোহাম্মদ খালেদ বলেন, যদি ‘ডিপোর্ট’ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ বৈধতার জন্য আবেদন করে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে তাদের যৌক্তিক অধিকারের জন্য আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।